‘খালেদা জিয়া রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছেন’

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজনীতি করবেন না, এমন মুচলেকা দেওয়া হয়েছে। তাঁর ভিত্তিতে তাঁকে বাসায় নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে শেখ সেলিম এ কথা জানান। তবে এ মুচলেকা খালেদা জিয়া নিজে দিয়েছেন, নাকি তাঁর পরিবারের সদস্যরা দিয়েছেন, তা এই সংসদ সদস্যের বক্তব্যে পরিষ্কার নয়।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ১৭ বছরের সাজা হওয়ায় নির্বাচন করতে পারবেন না উল্লেখ করে শেখ সেলিম জানান, খালেদা জিয়ার ভাই ও বোন হাসপাতাল থেকে বাসায় আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে অনুরোধ করেছিল।
তিনি বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে সরাসরি বাসায় আনা যায় না। যদি বাসায় বসে আবার রাজনীতি করে। সেই জন্য প্রধানমন্ত্রী তাদের বললো বাসায় গিয়ে আবার রাজনীতি করবে। সেটাতো দেওয়া যাবে না। তখন তারা মুচলেকা দিয়ে বলেছে-খালেদা জিয়া রাজনীতি করবে না। সাজাপ্রাপ্ত আসামী রাজনীতি করবে না।’
শেখ সেলিম বলেন, মুচলেকা দেওয়া ব্যক্তি ১০ ডিসেম্বর ক্ষমতা দখল করবে, শেখ হাসিনার পতন ঘটাবে। এসব প্রচার হলো জনগণকে বিভ্রান্ত ও তাদের লোকদের কিছু খোরাক দেওয়ার জন্য বলে।
তারেক রহমান ২০০৭ সালে রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে বিদেশ গিয়েছে-এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ৩০ বছর সাজা হয়েছে। মানিলন্ডারিং মামলায় সাত বছর সাজা হয়েছে। তারেক জিয়া কখনোই ঢাকায় আসবে না। ঢাকায় আসলে তাকে জেলে যেতে হবে। জেলে গেলে রাজনীতিতো দূরের কথা কখনোই নির্বাচনই করতে পারবে না।
তিনি বলেন, তারেককে মেরামত করতে দেশের জনগণ অধীর আগ্রহে বসে আছে। কিন্তু আসবে না, ও কোন দিন বাংলাদেশে আসবে না।
তিনি বলেন, কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে আমাদের রাজনীতির ব্যাপারে কিছু কূটনীতিকরা তোড়জোড় করছে। কারও কারও বাড়িতেও গিয়ে হাজির হচ্ছে। একি আশ্চর্য! কি বিচিত্র এই দেশ। অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকার নেই। এদেশের রাজনীতি নির্ধারণ করবে জনগণ। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছি। আমাদের কোন প্রভু নেই। আমাদের প্রভু হলো এই দেশের জনগণ। কারও প্রেসক্রিপশনে এই বাংলাদেশ চলবে না।
শেখ সেলিম বলেন, আমরা কী তাদের দেশের রাজনীতি নিয়ে কোন কথা বলি? আমরা তাদের নির্বাচন নিয়ে কথা বলি? আমেরিকার নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলেছিল… আমরা কী সেখানে গিয়ে বলেছি আসো আমরা সালিশি করি। কিছুদিন আগে মালেয়শিয়ার নির্বাচন নিয়ে একই অভিযোগ উঠেছিল। ওখানে কি আমরা হস্তক্ষেপ করেছি? আমাদের দেশের রাজনীতি নিয়ে কোন বিদেশি কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই।
সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কে আসলো, কে আসলো না.. ওই সত্তর সালের নির্বাচনেও মাওলানা ভাসানীর ন্যাপ হঠাৎ করে নির্বাচন থেকে উঠে চলে গেলেন। আজকে তাঁর পার্টির অবস্থান কোথায়? তোমরা যদি একটার পর একটা নির্বাচন না করো, তোমাদেরও করুণ পরিণতি হবে। মুসলিম লীগ ও ভাসানী ন্যাপের মতো হবে। বাংলাদেশে কোন অস্তিত্ব থাকবে না। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির সঙ্গে বিপক্ষের শক্তি কখনোই বিজয়ী হতে পারে না।