মুকুলের সুবাস ছড়াচ্ছে আমের ব্যানিজ্যিক রাজধানী নওগাঁয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ : খাদ্যশস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। গত কয়েক বছর ধরে এ জেলায় আমের উৎপাদন এবং ব্যানিজ্যিকি করন বৃদ্ধি পাওয়ায় এই জেলা আমের ব্যানিজ্যিক রাজধানী হিসেবে সুনাম কুরিয়েছে। ফাগুনের শুরুতে আম গাছগুলোতে মুকুলের সুবাস ছড়াচ্ছে চারিদিকে। বিগত বছরের ন্যায় এই বছরও জেলায় আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পুর্বের সব রেকোর্ড ভেঙ্গে দিবে বলে আশা করছে জেলার কৃষি বিভাগ।
জেলার ১১টি উপজেলায় মোট ৩০হাজার হেক্টর জমিতে এ বছর বিভিন্ন দেশী বিদেশী আম উৎপাদন হচ্ছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩লক্ষ ৭৮ হাজার মেট্রিকটন আম। আর এ বছর গাছে গাছে মুকুল ভালো আশায় প্রায় ২হাজার ৫০০ কোটি টাকার বানিজ্যের আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
জেলার সব উপজেলাতে আমের উৎপাদন হলেও মুলত পোরশা, সাপাহার , পত্নীতলা, বদলগাছি এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় উতপাদন বেশী হয়ে থাকে। তবে দেশের সর্বোবৃহত আমের হাট সাপাহার উপজেলায় হয়ে থাকে। বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটি আম চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় চাষিরা বর্তমানে আম চাষে বেশী মনোযগী হয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলার কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান- এ বছর গাছে আমের মুকুল বিগত দিনের তুলনায় অনেক ভালো এসেছে। তবে সঠিক সময়ে এবং সঠিক নিয়মে অনুমোদিত কিটনাশক এবং ছত্রাকনাশক ব্যবহারের ফলে এই মুকুল রক্ষা করা সম্ভব। তবে প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ যদি না আশে তবে কাঙ্কিত ফলন এখান থেকে সম্ভব বলে জানান তিনি।
আম ব্যবসায়ীরা জানান- এ বছর আমের মুকুলের পরিমান অনেক বেশি। যদি প্রাকৃতিক কোন বড় দুর্যোগ না ঘটে তবে উৎপাদনের দিক থেকে সব জেলাকে ছাড়িয়ে যাবে। প্রতি বছর নওগাঁর আমের চাহিদা দেশে এবং বিদেশে বাড়ছে। এবছরও সরকারি পৃষ্ঠপোশকতায় জেলা থেকে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আমেরিকা সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যাবে।সব মিলিয়ে জেলায় এ বছর প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার আমের বানিজ্যের সম্ভাবনা দেখছেন ব্যববসায়ীরা।
এদিকে আম চাষীরা জানান- বর্তমানে গাছের ডালগুলো মুকুলের ভাড়ে মাটিতে ন্যুয়ে পড়েছে। আমের ছোট ছোট কলি ফুটতে শুরু করেছে সবে মাত্র। বিগত দিনে ১বিঘা মাটিতে আম উৎপাদন করে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় হয়েছিলো। এবছর আশা করা যায় প্রতি বিঘা জমিতে তিন থেকে চার লাখ টাকার আম উৎপাদন হবে। যদি প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না ঘটে তবে এমন উৎপাদন সম্ভব বলে জানান চাষীরা।
এদিকে আম গাছ পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে পরিচর্যাকারীরা। সময় মত কিটনাশক এবং ছত্রাক নাষক ছিটিয়ে মুকুল ঝড়ে পড়ার রোধে কাজ করে যাচ্ছেন তারা । বাগান পরিচর্যা থেকে শুরু করে আম বিক্রি পর্যান্ত সময় কাজ করে তারা বাড়তি টাকা আয় করছেন যা তাদের পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়েছে বলে জানান তারা।
নওগাঁ জেলায় মুলত আম-রুপালী, বারী-৪, ব্যানানা ম্যাংগো, কাটিমন, গোপাল ভোগ, ল্যাংরা, ফজলী সহ বিভিন্ন জাতের আমের উৎপাদন হয়ে থাকে। এসকল গাছে গাছে এখন আমের মুকুলে মুকুলে ছেয়ে আছে চারদিকে।