কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিও ফাঁসের জেরে আন্দোলন, সহকারী বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষকসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম এর কণ্ঠ সদৃশ ফোন আলাপন এবং প্রশ্নফাঁস বিষয়ক একাধিক অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারীকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপাচার্যের সঙ্গে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চাকুরি প্রার্থী অলিউর রহমানের একটি কথাপোকথনের অডিও ফাঁস হয়। সেখানে উপাচার্যকে বলতে শোনা যায়, পয়সা দিয়ে হলেও আরও দুইজন প্রার্থী যোগাড় করতে হবে। এছাড়াও প্রায় ৬ মিনিটের ওই অডিওতে চাকুরী প্রার্থীর সাথে উপাচার্যের নিয়োগ নির্বাচনী পরিক্ষার প্রশ্নপত্র বিষয়ক আলাপন করতে শোনা যায়’।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৪দিন ধরে দুর্নীতির অভিযোগ এনে উপাচার্যকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে পদ থেকে অপসরণের দাবীতে উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন চালিয়ে আসছে ‘বিশ্ববিদ্যালয় অস্থায়ী কর্মচারী পরিষদ, নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে। এ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সবাই ইবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। বৃহষ্পতিবার ৪র্থ দিনের মতো আন্দেলন করেন তারা। এসময় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইবি প্রক্টরিয়াল বডির নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা পুলিশ।
বুধবার সকাল ৯টা একে থেকে আনোলনকারীরা ভিসি কার্যালয়ের সামনে তাদের ঐক্যবদ্ধ হতে দেখা যায়। এসময় বিক্ষোভকারীরা ‘ভিসির দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘দুর্নীতিবাজ ভিসির অপসারণ চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে আন্দোলনকারীরা। পরে উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ দেখা করে ‘অস্থায়ী চাকরিজীবী পরিষদের’ সভাপতি মিজানুর রহমান টিটু ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল জোয়ার্দার। এদুই নেতার নেতৃত্বে প্রায় ৩৫জন অস্থায়ী কর্মচারী এই আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
এদিকে সর্বশেষ ইবি উপাচার্যের অডিও ধারণ ও সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ায় জড়িত সন্দেহে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারীকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান। বুধবার রাতে উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম পিএস আইয়ূব আলীকে অব্যাহতি দেওয়ার আদেশ দেন।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘ভিসি স্যার গতরাতে (বুধবার) আমাকে ডেকেছিলেন। কিন্তু শরীর খারাপ থাকায় যেতে পারিনি। তাই বৃহষ্পতিবার সকালে এসে অব্যাহিতর আদেশপত্র প্রস্তুত করে দিয়েছি। এখানে ভিসি স্যার শুধু তাকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলেছেন। কোনো কারণ জানাননি’।
এর আগে পিএস আইয়ুব আলীকে অপসারন দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতারা। দাবি আদায়ে আইয়ুব আলীর কার্যালয় ভাঙচুর ও মারধরও করেছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেই আইয়ুব আলীই উপাচার্যের অডিও ধারণ ও তার ফাঁসের ঘটনায় জড়িত প্রধান সন্দেহজনক ব্যক্তি হিসেবে তাকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন রেজিষ্ট্রার অফিস সূত্রে।