সহজাত দুর্বলতা ও নীতিগত ত্রুটিই শ্রীলঙ্কার পতনের কারণ : কেন্দ্রীয় ব্যাংক

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : আগামী বছর থেকে দেশটির অর্থনীতি পুনরায় প্রবৃদ্ধিতে ফিরে বলে প্রত্যাশাও করা হয়েছে।
কী কারণে শ্রীলঙ্কার মত উদীয়মান একটি দেশকে নিজেদের ইতিহাসের ভয়াবহতম অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে এবং সংকট কতটা গভীর তার একটি রূপরেখা দেখিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
দেখিয়েছে, কিভাবে সে দেশের মানুষ তাদের আয় দিয়ে খাদ্য থেকে জ্বালানির ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যর্থ হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বেশ কিছু সহজাত দুর্বলতা’ এবং ‘নীতিগত ত্রুটিই’ দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিকে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের দিয়ে ঠেলে দিয়েছে।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু হতাশার কথাই নয় বরং আশার বাণীও শুনিয়েছে। বলেছে, আগামী বছর থেকে দেশটির অর্থনীতি পুনরায় প্রবৃদ্ধিতে ফিরে আসবে বলে তারা প্রত্যাশা করছে।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্বানুমান অনুযায়ী, এ বছর দেশটির অর্থনীতি আরো ২ শতাংশ সংকুচিত হবে। তবে তারা আশা করছেন, ২০২৪ সাল নাগাদ অর্থনীত ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পূর্বানুমান অবশ্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বানুমানের তুলনায় বেশ খানিকটা আশাবাদী।
আইএমএফ-র পূর্বানুমান অনুযায়ী, ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রটির অর্থনীতি এ বছর আরো প্রায় ৩ শতাংশ সংকোচনের মধ্যদিয়ে যাবে এবং আগামী বছর ১ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা তাদের প্রতিবেদনে আরো দেখিয়েছে কীভাবে গত বছর সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি প্রায় ৭০ শতাংশে পৌঁছে যায়। সেখানে তাজা ফল, গম ও ডিমের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।
ওই সময়ে পরিবহন ব্যয় এবং বিদ্যুৎ ও পানির মত জরুরি ইউলিটি খরচ এমনকি আরো দ্রুত গতিতে বেড়েছে।
গত বছর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ সংকুচিত হয় এবং ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর প্রথমবারের মত দেশটি নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে।
যে কারণে শ্রীলঙ্কার পক্ষে আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজার থেকে ঋণ পাওয়া আরো কঠিন হয়ে পড়েছে।
চীনের কাছে শ্রীলঙ্কার দেনা প্রায় ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার এবং ভারতের কাছে দেনা ১০০ কোটি মার্কিন ডলার। যদিও গত ফেব্রুয়ারিতে উভয় দেশ তাদের ঋণ পুনর্গঠনে রাজি হয়েছে এবং ঋণ শোধের জন্য শ্রীলঙ্কাকে আরো সময় দিয়েছে।
এছাড়াও, গত মাসে আইএমএফ শ্রীলঙ্কাকে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিতে রাজি হয়েছে।
আগামী সেপ্টেম্বরে আইএমএফ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার আগে শ্রীলঙ্কার সরকার বর্তমানে তাদের বন্ডহোল্ডার এবং ঋণদাতাদের সঙ্গে ঋণ পরিশোধের বিষয়ে আলোচনা করছে।