রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের প্রধান চ্যালেঞ্জ ভোটারদের কেন্দ্রে নেয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের বিপরীতে এবার শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তারপরও নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এ নির্বাচনকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না। দিনরাত এক করে তিনি প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
এবারের নির্বাচনে তার প্রধান চ্যালেঞ্জ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া। এ লক্ষ্যেই তিনিসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। নির্বিঘ্ন ভোট দিতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করে সকাল সকাল কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি অনুরোধ রাখছেন তিনি।
আগামী ২১ জুন রাজশাহী সিটি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এখানে চারজন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন, আওয়ামী লীগের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নৌকা, জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপনের লাঙ্গল, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুরশিদ আলমের হাতপাখা, জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ারের গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রতিদ্বন্দ্বী চার মেয়র প্রার্থীর মধ্যে প্রচারসহ সব দিক থেকে এগিয়ে আছেন সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। প্রতীক বরাদ্দের দিনেই পোস্টার, ব্যানার সাঁটিয়ে প্রচারের মাঠ নিজের কবজায় নেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। শহরের এমন কোনো স্থাপনা নেই, যেখানে তাঁর পোস্টার-ব্যানার লাগানো হয়নি। ৩০টি ওয়ার্ডে এই প্রার্থীর ৩০টি প্রচার মাইকও চলছে।
এছাড়াও খায়রুজ্জামান লিটন প্রতিদিনই সকাল-সন্ধ্যা মতবিনিময় সভা ও গণসংযোগ করছেন। একটি ট্রাকে করে প্রচার চালান তিনি। সেখানে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতা-কর্মীরাও থাকছেন। তাঁর এবার স্লোগান, ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান, এবার হবে কর্মসংস্থান’। প্রতিদিন কর্মসংস্থান নিয়েই তিনি বেশি বক্তব্য দিচ্ছেন।
নির্বাচনে শক্ত অবস্থানের পরও ব্যাপক প্রচারণার বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, এবারের নির্বাচনের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া। বিগত নির্বাচনগুলোতে দেখা যাচ্ছে ভোটাররা কেন্দ্রে যাচ্ছেন না। এতে দল ও সরকারের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। দিনরাত প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্ন ভোট দিতে পারবেন- সেই বিষয়টি বোঝানো হচ্ছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু বলেন, আমাদের প্রার্থীর বিপক্ষে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকলেও নির্বাচনকে আমরা গুরুত্ব দিয়েই দেখছি। বিশেষ করে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা যা করার আমরা করবো। আমাদের টার্গেট ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ভোটারকে কেন্দ্রে উপস্থিত করা।
তিনি বলেন, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোটেরদের কেন্দ্রে নিয়ে যায়। এবার তাদের সঙ্গে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ভোটেরদের কেন্দ্রে নিয়ে যেতে কাজ করবে।
গা ছাড়া প্রচার-প্রচারণা জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপনের। তার প্রচার-প্রচারণা তেমন দেখা যাচ্ছে না। মাইকিংয়ে প্রচার চালালেও পোস্টার নেই বললেই চলে।
তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুরশিদ আলম নগরজুড়ে জোরদার প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণায় সাংগঠনিক পূর্ণ শক্তি নিয়োগ করেছে দলটি। নগরজুড়ে দলটির মেয়র প্রার্থী পোস্টার চোখে পড়ে। প্রচার মাইকেও হাতপাখা প্রতীকে ভোট চাওয়া হচ্ছে।
জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী লতিফ আনোয়ার প্রচার-প্রচারণা চলছে সীমিত পরিসরে। নগরে বিচ্ছিন্নভাবে তাঁর কিছু পোস্টার দেখা যায়। তবে বেশ কিছু প্রচার মাইকে তাঁর প্রচারণা চলছে।
চারজন মেয়র ছাড়াও ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডের বিপরিতে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১২ এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের বিপরিতে নারী কাউন্সিলর পদে ৪৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
রিটানিং অফিসার দেলোয়ার হোসেন জানান, রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটার রয়েছেন ৩ লক্ষ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। ১৫৫টি ভোট কেন্দ্রে তাদের ভোটাকধিকার প্রয়োগ করবেন। ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহন করা হবে এবং প্রতিটি কেন্দ্র বাহিরে ও কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে।