কাস্টমাইজড পেস্ট্রির সফল উদ্যোক্তা শাহারিয়া দৃষ্টি

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২৩; সময়: ৩:৪২ pm | 
খবর > বিশেষ সংবাদ

নম্রতা জয়সোয়াল : সাধারন দোকানের পেস্ট্রির থেকে ভালো মানের ঘরোয়া পেস্ট্রি পাওয়া গেলে কে না খেতে চায়। এমন একজন তরুন উদ্যোক্তা রাজশাহীর মেয়ে মোহাসিনা শাহারিয়া (দৃষ্টি)।

ছোটবেলা থেকেই রান্নার প্রতি দারুণভাবে আগ্রহী ছিলেন, বিশেষ করে পেস্ট্রির প্রতি তার দুর্বলতা বরাবরই। ছোটবেলার এই রান্নার শখটা পেশা হিসেবে নিয়েছেন দৃষ্টি। মূলত শখের বশেই পেস্ট্রির উপর একটি প্রফেশনাল কোর্সও করেছিলেন।

বর্তমানে দৃষ্টি রাজশাহীর সরকারি মহিলা কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়ন করছেন। বাবা-মা র একমাত্র সন্তান। বাবা গোলাম মোর্তজা হোসেন পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার এবং মা একজন গৃহিণী।

দৃষ্টি বলেন, প্রথম দিকে মূলত নিজে খাওয়া ও বন্ধুদের খাওয়ানোর জন্যই পেস্ট্রি তৈরি করা শুরু করেন।এবং সেসকল পেস্ট্রির ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে আপলোড দিতে থাকেন। তখনো সেটাকে নিয়ে বিজনেস করার কোন চিন্তা করা হয়ে ওঠেনি।

২০১৯ সালের জুলাই এর শুরুর দিকে মা,শিক্ষক ও বন্ধুদের উৎসাহে “মম’স পেস্ট্রি জোন” নামে একটি ফেসবুক পেজ খোলেন।

দৃষ্টির প্রথম অর্ডারটা ছিলো ১ পাউন্ড ভ্যানিলা পেস্ট্রি। যার মূল্য ছিলো ৫০০ টাকা। এই প্রথম অর্ডার টা পেতে উনাকে প্রায় দুই মাস অপেক্ষা করতে হয়েছিল।

শুরুর দিকে মা যথেষ্ট অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন, তবে বাবার মত ছিল আগে পড়াশোনা শেষ করে তারপর অন্য কিছু।

তবে মেয়ের কাজের প্রতি আগ্রহ ও অগ্রগতি দেখে তিনিও আর বাধা দেন নি। বরং অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।
তারপর অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এখন একজন সফল উদ্যোক্তা।

বিভিন্ন উপলক্ষ কেন্দ্রিক পেস্ট্রির উপর অর্ডার নিয়ে থাকেন দৃষ্টি। গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সময়ের মধ্যে পৌঁছে দেয় সেগুলো।

পেস্ট্রি শপের সাধারণ পেস্ট্রির তুলনায় ঘরোয়াভাবে তৈরি পেস্ট্রির চাহিদা একটু বেশি হাওয়ায়। দৃষ্টি মূলত পেস্ট্রি আইটেমের উপরে বেশি প্রাধান্য দেন। এখন ভ্যানেলাসহ প্রায় ১০ প্রকার পেস্ট্রি সেল করেন।

পরবর্তীতে বিভিন্ন স্ন্যাকস আইটেম যেমন চিকেন রোল, চিকেন ডোনাট, ক্রিস্পি চিকেন,চিকেন সিঙ্গারা, ভেজিটেবল রোল, ভেজিটেবল সিঙ্গারা ও ফুচকার মত নানা মুখরোচক খাবার সরবরাহ করেন”মম’স পেস্ট্রি জোন” থেকে।

২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হওয়া ঘরোয়া খাদ্য মেলায় অংশগ্রহণ করেন দৃষ্টি এবং সাড়া পান।
তিনি বর্তমানে মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকার উপরে আয় করে থাকেন।

দৃষ্টি চলার পথে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছে। একজন নারী হয়ে ব্যবসায় মননিবেশ করাটা প্রথমদিকে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন না অনেকেই ভালোভাবে নেননি। তবে চলার পথে দৃষ্টি নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় আজ সে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা।

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী পুরুষদের চেয়ে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যায় বেশি। যা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।

নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে দৃষ্টি বলেন, ব্যবসায়ী পণ্যের পরিমাণের থেকে গুণগত মান বজায় রাখাটাই মুখ্য।

দৃষ্টি একজন দেশ সেরা কেক আর্টিস্ট হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে চান। এছাড়া ভবিষ্যতে উনার রাজশাহী শহরে একটি রেস্টুরেন্ট করার লক্ষ্য রয়েছে।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন