নাটোরে মা-ছেলেসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৩; সময়: ৩:৪৭ pm | 
খবর > আইন-আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর : নাটোরে দুটি পৃথক মামলায় মা-ছেলেসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন দিয়েছেন একই আদালত।রোববার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ( জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম পৃথক এই দুটি মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবনের আদেশ দিয়েছেন।

রায়ে তিনজনকেই ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাকুরিয়া কালাইকুড়ি গ্রামের শচিন চন্দ্র মহন্তের স্ত্রী গীতা রানী মহন্ত (৬০) ও ছেলে দুলাল চন্দ্র মহন্ত (৪০) এবং অপরজন নাটোর সদর উপজেলার জালালাবাদ টাঙ্গাইলপাড়া গ্রামের মৃত হেলালের ছেলে ওয়াজেদ আলী (৪৫)।

দন্ডিতদের মধ্যে গীতা রানী মহন্ত ও তার ছেলে দুলাল চন্দ্র মহন্তকে যৌতুক ও গৃহবধু হত্যা মামলায় এই দন্ডাদেশ দেয়া হয়। আপরটি প্রতিবন্ধি নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের দায়ে এই যাবজ্জীবন দেয়া হয়।

আদালাতের স্পেশাল পিপি আনিসুর রহমান জানান, নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাকুরিয়া কালাইকুড়ি গ্রামের শচিন চন্দ্র মহন্তের ছেলে দুলাল চন্দ্র মহন্তের সাথে প্রায় ১১ বছর আগে বগুড়ার নন্দিগ্রাম উপজেলার থালতা গ্রামের তপন মহন্তের মেয়ে গীতা রানী মহন্তের বিয়ে হয়।

বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে গীতার ওপর নির্যাতন করা হয়। বিবাহিত জীবনে তাদের সংসারে তিনটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। মামলার বাদি ২০১১ সালের ১৪ মার্চ মেয়ে শ্বশুরালয়ে বেড়াতে যান।

এদিন রাত্রিতে মেয়র শ্বশুরালয়ে থাকা অবস্থায় জামাতা দুলাল চন্দ্র মহন্ত ও তার মাসহ পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য মেয়েকে ঘরের দরজা বন্ধ করে নির্যাতন করতে থাকে।

এসময় মামলার বাদি তপন মহন্ত তার মেয়েকে রক্ষা করতে গেলে তাার ওপরও চড়াও হয়ে তাকেও নির্যাতন করা হয়। তারা গৃহবধুর বাবা তপন মহন্তের কাছে যৌতুকের টাকা দাবি করে।

অপরাগতা জানালে তারা বাদির সামনে তাকেসহ তার মেয়েকে লাথি ও কিল ঘুষি সহ মারপিট করে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। তাদের নির্যাতনে ওই গৃহবধুর মৃত্যু হলে একপর্যায়ে তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে।

এ ঘটনায় তপন মহন্ত বাদী হয়ে সিংড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রোববার মামলার রায়ে বিচারক মা ও ছেলেকে যাবজ্জীবনের আদেশ দেন।

অপর ধর্ষণ মামলাটি দায়ের করেন ধর্ষিতা ওই প্রতিবন্ধি নারী। মামলায় বলা হয়, ২০১২ সালের ১৪ জুন প্রতিদিনের মত বাড়ির পাশের মোহনপুর এলাকায় কোরান শিক্ষা গ্রহণ করতে যাওযার সময় ওৎ পেতে থাকা ওয়াজেদ আলী ওই নারীকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে ফসলের ক্ষেতে গিয়ে ধর্ষণ করেন।

এ ঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদি হয়ে সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে একই আদালত অভিযুক্ত ওয়াজেদ আলীকে যাবজ্জীবনের আদেশ দেন।

পিপি আরও জানান, যৌতুক ও হত্যা মামলায় দন্ডিত আসামীদের কাছে থেকে আদায়কৃত জরিমানার টাকা নিহত গৃহবধূর মা ও বাব এবং ধর্ষণ মামলার জরিমানার টাকা ভিকটিমকে দিতে আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ বিচারক।

 

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন