৩০ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর সব কিছু ফিরে পাচ্ছেন এনএসআই কর্মকর্তা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বিএনপি সরকারের সময় চাকরিচ্যুত জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতরের (এনএসআই) সাবেক কর্মকর্তা বখতিয়ার আহমেদ খানের বেতন-ভাতাসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এ সংক্রান্ত এক রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন।
এদিন আদালতে বখতিয়ার আহমেদ খানের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আখতার ইমাম ও ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম এবং ব্যারিস্টার রেশাদ ইমাম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, অবসরপ্রাপ্ত লে. বখতিয়ার আহমেদ খান ১৯৮২ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতরের কারিগরি শাখায় উপ-পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এসময় কারিগরি শাখার প্রধান হিসেবে বিএনপির সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং করতেন। যা সরাসরি সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের কাছে উপস্থাপন করতেন।
১৯৯০ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ে তাকে ওএসডি হিসেবে সংযুক্ত করা হয়। এরপর ১৯৯১-১৯৯২ সাল পর্যন্ত ওএসডি থাকা অবস্থায় একবার তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন তিনি।
তদন্ত কমিটি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এরশাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য বললে অসম্মতি প্রকাশ করেন তিনি। ১৯৯২ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন বিএনপি সরকার তাকে চাকরিচ্যুত করে। এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে দীর্ঘ ৩০ বছর আইনি লড়াই শেষে বৃহস্পতিবার সর্ব্বোচ আদালত তার পক্ষে রায় দিয়েছেন।
রায়ের পর বখতিয়ার আহমেদ খান বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি প্রতি আমার অবিচল আস্থা ছিল। ৩০ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর আজ আমার পক্ষে চূড়ান্ত রায় এলো। আমার চাকরি আর পাব না। তবে প্রাপ্য আর্থিক সুযোগ সুবিধা পাব। সেই সাথে আজকের রায়ে মাধ্যমে আমার পারিবারিক ও সামাজিকভাবে মর্যাদা পুনরুদ্ধার হবে।
বিএনপি সরকারের আমলে ১৯৯২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর বখতিয়ার আহমেদ খান চাকরিচ্যুত হন। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ট্রাইবুন্যাল মামলা করলে; আদালত চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করেন। তাকে আবার চাকরিতে পুনর্বহালের আদেশ দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে সরকার আপিল করলে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইবুন্যাল, প্রশাসনিক ট্রাইবুন্যালের আদেশই বহাল রাখেন।
এর ৮ বছর পর সরকার প্রশাসনিক আপিল ট্রাইবুন্যালের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন। তবে ২০২০ সালে টাইম বারের যুক্তিতে লিভ টু আপিল খারিজ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে ২০২১ সালে খারিজ আদেশটি পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়। সে আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।