জীবনে সাফল্য পেতে কখন ঘুমাবেন?

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৪; সময়: ১১:৪১ am | 
খবর > লাইফস্টাইল

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : সুস্থ্য থাকতে নিয়মিত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। আর সুস্থ না থাকলে সবকিছুতেই আগ্রহ হারিয়ে যায়। ফলে জীবনের সাফল্যও থেকে যায় অধরা।

সবাই কমবেশি ঘুমান; তবে অনেকের ঘুমের কোনো শৃঙ্খলা নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক সময়ে ঘুমালে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত হয়। আর এটিই জীবনে সাফল্য পেতে দারুণ কাজ করে।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাজের চাপ বা সময়ের অভাবে বহু মানুষ অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে বাধ্য হন। কেউ কেউ আবার জেগে থাকেন স্বেচ্ছায়। কিন্তু দেরি করে ঘুমাতে গেলে ঘুমের অভাব হয়, যা ডেকে আনতে পারে বড় অসুখ।

চিকিৎসকরা বলছেন, ঘুমের পরিমাণ কমলে একগুচ্ছ অসুস্থতা আসে। যার খারাপ প্রভাব পড়ে নানা ক্ষেত্রে। যেমন- কাজে অমনযোগী হওয়া, বিলম্বিত স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া, দুর্ঘটনার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পাওয়া, মানসিক অসুস্থতা যেমন- মাদক সেবন, হতাশা, উদ্বেগে থাকা, এমনকী গর্ভাবস্থাতেও একাধিক সমস্যার শঙ্কা তৈরি হয়।

সম্প্রতি ঘুম নিয়ে একটি বিশেষ গবেষণা হয়েছে যুক্তরাজ্যে। ইউরোপীয় হার্ট জার্নালে প্রকাশ হয়েছে ঘুম বিষয়ক প্রতিবেদন। সেখানে বলা হয়েছে, রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে। কারণ এটিই ঘুমানোর আদর্শ সময়।

ইউরোপীয় হার্ট জার্নালে প্রকাশিতা গবেষণা অনুযায়ী, ৪৩ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ৮৮ হাজার মানুষের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। অ্যাক্সিলোমিটার ব্যবহার করে সেসব মানুষের ঘুমানো ও ঘুম থেকে ওঠার সময় নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

তাতে দেখা গেছে, যারা রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঘুমাতে গেলে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমে যায়। শঙ্কা করে নানা জটিল রোগেরও।

এ প্রসঙ্গে এক্সিটার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিওরোসায়েন্সের লেকচারার এবং এই সমীক্ষার লেখক ড. ডেভিড প্ল্যানস বলেন, আমাদের সমীক্ষার প্রধান বিষয় একজন মানুষের ২৪ ঘণ্টার সাইকেলের মধ্যে ঘুমানোর নির্দিষ্ট সময়।

সবচেয়ে ঝুঁকির সময় হলো মাঝ রাতের পর ঘুমানো। কারণ এতে সকালে উঠতে দেরি হয় এবং দিনের আলো শরীরে পৌঁছায় না। ফলে দেহঘড়ি ঠিক হতে সমস্যা হয়।

সাফল্যও যে রাতে ঘুমের সময়ের ওপর নির্ভরশীল তা বলেছেন সাফল্যের শীর্ষে থাকা বিশিষ্ট টকশো সঞ্চালক ও লেখিকা ওপরাহ উইনফ্রে। তিনি রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টার পর্যন্ত ৮ ঘণ্টা ঘুমান।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল ফোন হাতে নেওয়ার বদঅভ্যাস তিনি ছেড়েছেন। এর পরিবর্তে তিনি প্রথমে দাঁত ব্রাশ করেন এবং তারপর পোষা কুকুরদের যত্ন নেওয়ার পেছনে সময় দেন। এরপর তিনি শরীরচর্চা করার জন্য জিমে যান।

মার্কিন সংবাদ মাধ্যম দ্য হলিউড রিপোর্টারকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি কোনোদিন অ্যালার্ম ব্যবহার করিনি। আমি এতে বিশ্বাসই করি না। সকালবেলায় ঘুম ভাঙার পর আমার প্রথম চিন্তা, ‘ওহ! আমি এখনও বেঁচে আছি। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ!’, যোগ করেন ওপরাহ।

একই সুরে তাল মিলিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ওয়ারেন বাফেট। তিনি ঘুমকে ভীষণ গুরুত্ব দেন এবং টানা ৮ ঘণ্টার নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের জন্য প্রতিদিন রাত পৌনে ১১টার মধ্যে শুয়ে পড়েন।

তিনি মনে করেন, এই অভ্যাসটা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দিনের ৮০ শতাংশ সময় তিনি ব্যয় করেন পড়াশোনা করে, যার জন্য প্রচুর মানসিক শক্তি প্রয়োজন।

সংবাদ মাধ্যম পিবিএসকে তিনি বলেন, ‘আমি প্রচুর ঘুমাই। আমি ঘুমাতে পছন্দ করি, যার কারণে আমি সাধারণত রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাই।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন