ভোটের আগে আর সাজা হচ্ছে না বিএনপি নেতাকর্মীদের

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২৪; সময়: ১২:১২ pm | 
খবর > রাজনীতি

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের আগে আর সাজা হচ্ছে না বিএনপি নেতাকর্মীদের। ১ জানুয়ারির পর সাজার রায় ঘোষণার তারিখ হঠাৎই পিছিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের ওপর হামলা, কর্তব্যকাজে বাধা, ককটেল বিস্ফোরণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগসহ নাশকতার অভিযোগে করা ১১৩ মামলায় গত পাঁচ মাসে ১ হাজার ৭৫১ বিএনপি নেতাকর্মীর সাজা দিয়েছে ঢাকার আদালত। তবে, নতুন বছরের ১ তারিখের পর আর কোনো রায় ঘোঘণা করা হয়নি।

গত ২ থেকে ৪ জানুয়ারি ঢাকার মহানগর আদালতে ১১টি মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ছিল। এসব মামলার রায়ের জন্য পরবর্তী তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে, আবার কয়েকটির আর তারিখও নির্ধারণ করা হয়নি। বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মতে, সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের সাজা দিয়ে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার যে পরিকল্পনা নিয়েছিল তা হয়তো পূরণ হয়ে গেছে বা আন্তর্জাতিক চাপে রায় ঘোষণা বন্ধ রয়েছে।

আদালতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২ জানুয়ারি ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালতে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে গুলশান থানায় নাশকতার অভিযোগে করা এক মামলা ও ২০১০ সালের আগস্টে উত্তরা মডেল থানার এক মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিচারক রায় ঘোষণা করতে এজলাসে উঠে আবার নেমে যান। এ দুই মামলার রায় কবে ঘোষণা করা হবে তা এখনো ঠিক হয়নি বলে জানান সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী জনি।

তিনি বলেন, মহানগর হাকিম দুই মামলার রায় ঘোষণা করতে এজলাসে উঠেছিলেন। কিন্তু পরে আর রায় ঘোষণা করেননি।

একই আদালতে ৩ জানুয়ারি মতিঝিল, চকবাজার, কোতোয়ালি থানার তিনটি মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য ছিল। এ তিন মামলারও রায় ঘোষণা করা হয়নি। এ তিন মামলার রায় ঘোষণার জন্য পরবর্তী তারিখও নির্ধারণ করা হয়নি এখনো।

এছাড়া ঢাকা মহানগনর হাকিম আদালতে আরো কয়েকটি মামলার রায় ঘোষণার তারিখ পিছিয়েছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে করা তুরাগ থানার একটি, শাহআলী থানার একটি, চকবাজার থানার একটি, শাহজাহানপুর থানার একটি, কামরাঙ্গীরচর থানার একটি ও হাজারীবাগ থানার একটি মামলা রয়েছে।

ঢাকার আদালতের বেশ কয়েকজন বেঞ্চ সহকারী জানান, ভোটের আগে আর কোনো রায় ঘোষণা করা হবে না। বিএনপিপন্থি আইনজীবী শেখ শাকিল আহম্মেদ রিপন বলেন, সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের সাজা দিয়ে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার যে পরিকল্পনা করেছিল তা হয়তো পূরণ হয়ে গেছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক চাপে হয়তো রায় ঘোষণা বন্ধ রয়েছে। সরকার আদালতকে ব্যবহার করেছে এসব ক্ষেত্রে।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, নিম্ন আদালতের রায় ঘোষণা করা বা না করা সবই সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলছে না বিধায় যখন খুশি রায় দেওয়া হচ্ছে, আবার রায় দিচ্ছে না।

এ ব্যাপারে মন্তব্য করেও কোনো ফায়দা হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আদালত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে। যে কারণে সরকারের ইচ্ছেমতো রায় দেওয়া হচ্ছে। এখানে আইন মানা হচ্ছে না। আইনের শাসন নেই বিধায় এ কাজগুলো হচ্ছে।

এ বিষয়ে নিম্ন আদালতের সরকারি কৌঁসলি (পিপি) আবদুল্লাহ আবুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন