রাবির নির্মাণাধীন হলের ছাদ ধস : এখনও কাজই শুরু করেনি তদন্ত কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নির্মাণাধীন হলের ছাদ ধসের ঘটনার পর ওইদিনই (৩০ জানুয়ারি) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে, সাত কার্যদিবসের মধ্যে দুই কার্যদিবস শেষ হলেও কমিটি এখনো কাজই শুরু করেনি।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কমিটির আহ্বায়ক এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক কামারুজ্জামান সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অধ্যাপক কামারুজ্জামান সরকার বলেন, আমি রাজশাহীর বাইরে আছি। এখনো তদন্ত কাজ শুরু করতে পারিনি। যেহেতু কাজই এখনও শুরু করতে পারিনি, সেহেতু প্রতিবেদন কবে দিতে পারবো, সেবিষয়ে কিছু বলতে পারছিনা এখন।
তবে, কমিটির সদস্য রাবির প্রকৌশল দপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইমরুল হাসান বলেন, আমাদের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে সবাই এখনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে পারেননি। উনারা হয়তো কাল বা পরশু আসবেন।
কমিটির আরেক সদস্য গণপূর্ত বিভাগ, রাজশাহীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলামের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে এক নারী কল রিসিভ করে ‘রং নাম্বারে কল দিয়েছেন’ বলে কলটি কেটে দেন।
এখনও তদন্ত কমিটির কাজ শুরু না হওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে বলেন, কাজ শুরু না হওয়ার বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবোনা। কমিটি গঠনের পর তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা হয়তো শুক্র-শনিবারের কারণে কাজ শুরু করেননি।
মঙ্গলবারে কমিটি গঠনের পর বুধ ও বৃহস্পতিবার দুইদিন কার্যদিবস ছিল জানালে তিনি বলেন, তাদেরকে চিঠি দিয়েছি, সেটাতো তাদেরকে রিসিভ করতে হবে। সম্ভবত তারা বৃহস্পতিবারে চিঠি পেয়েছেন। তাদেরও আবার কমিটির মিটিং করতে হবে। এরপরে তারা কাজ শুরু করবে।
আমি জেনারেল কথা বলছি। আমরা বিশ্বাস করি, যথেষ্ট যোগ্য লোকদের দিয়েই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাও হয়তো নির্ধারিত সাত কার্যদিবসের মধ্যেই রিপোর্ট দিয়ে দিবেন। তারপরও কাজটা দ্রুত শুরু করার জন্য আমরা কথা বলবো।
চিঠি পাওয়ার বিষয়ে কমিটির সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইমরুল হাসান বলেন, আমরা মৌখিকভাবে জানি, কে কে কমিটিতে আছে। কমিটি গঠনের দিনই (মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি) আমাকে ফোনে জানানো হয়েছে। আর চিঠির বিষয়ে আমি জানিনা। বৃহস্পতিবারে আমার অফিসে চিঠি এসে থাকলে, আমি সেটা এখনো হাতে পায়নি। কারণ বৃহস্পতিবারে আমি ছুটিতে ছিলাম।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) ঢালাই শেষে রাবি’র নির্মাণাধীন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হলের একাংশের ছাদ ধসে পড়ে। এতে নয়জন শ্রমিক আহত হন। হলের একাংশের ছাদ ধসে পড়ায় বাকি কাজের গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাই, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ওইদিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে এক জরুরি সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে জানান জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে। ওইসময় তিনি বলেন, কমিটি সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিবে।