রাবিতে বিক্রেতা ছাড়াই খাবার বিক্রি করবে ‘ভেন্ডিং মেশিন’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি : ভেন্ডিং মেশিন হলো এক ধরনের যন্ত্র যা গ্রাহক মুদ্রা বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য যেমন স্ন্যাকস, পানীয়, ভোক্তাপণ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিতরণ করে করতে পারে। এমনকি লটারির টিকিট এবং সোনাও এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিতরণ করা যায়।
যদিও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভেন্ডিং মেশিন সরবরাহ করবে না লটারির টিকিট কিংবা সোনা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা যেন সহজেই প্রয়োজনীয় খাবার কিনতে পারে, সে লক্ষ্যেই যুক্ত হচ্ছে আধুনিক এই ভেন্ডিং মেশিন।
মেশিন থেকে যেকোনো সময় নগদ টাকা বা অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরাই কিনতে পারবেন পছন্দের সব পণ্য। এই পদ্ধতিতে মেশিন থেকে চাহিদাকৃত পণ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে বের হয়ে আসবে।
এতে লাগবে না কোনো বিক্রেতার উপস্থিতি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক একরামুল ইসলাম।
অধ্যাপক একরামুল ইসলাম জানান, “শিক্ষার্থীদের সুবিধার দিকটি বিবেচনায় নিয়েই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলে ভেন্ডিং মেশিন যুক্ত হতে যাচ্ছে। আধুনিক এই মেশিনে কেক, চিপ্স, সফট ড্রিংকস, আইসক্রিমসহ শুকনো খাবারগুলো খুব সহজেই ক্রয় করা যাবে।”
কবে নাগাদ এই মেশিন হলগুলোতে যুক্ত হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক ড. একরামুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিক কিছু কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ভেন্ডরের সাথে চুক্তিপত্রসহ কিছু অফিসিয়াল কার্যক্রম বাকি আছে। এগুলো সম্পন্ন হলেই ভেন্ডিং মেশিনগুলো এক এক করে হলগুলোতে স্থাপন করা হবে।’
যে প্রতিষ্ঠানটি এই সেবা চালু করতে যাচ্ছে তাদের নাম ইওর ক্যাম্পাস। ইওর ক্যাম্পাস একটি স্মার্টআপ কোম্পানি, যারা হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন স্মার্ট সেবা নিয়ে কাজ করে।
ইওর ক্যাম্পাসের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর আবু সাহাদাৎ বাঁধন বলেন, ইওর ক্যাম্পাস একটি স্মার্টআপ কোম্পানি। যেটি হলে থাকা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমরা ভেন্ডিং মেশিন দিয়েছি। প্রশাসনের সাথে অফিসিয়াল কিছু কার্যক্রম শেষ হলেই আনুষ্ঠানিকভাবে এই সেবাটি চালু হবে।
আধুনিক এই মেশিনটি স্থাপন করা হলে আবাসিক হলে এবং হল সংলগ্ন দোকান বন্ধ থাকা অবস্থাতেও নিজেদের পছন্দের পণ্য কিনতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
ভেন্ডিং মেশিন ছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য আরও কিছু সেবামূলক কার্যক্রম করার ইচ্ছে পোষণ করে ইওর ক্যাম্পাসের রাবি ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর আবু সাহাদাৎ বাঁধন বলেন, এর পরপরই হলে হলে আমরা ওয়াশিং স্টেশন দিবো।
যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা সহজে কাপড় পরিস্কার করার সেবাটি গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়াও স্মার্টবিন নামে আমাদের নতুন সেবাটিও চালু করা হবে।
ভেন্ডিং মেশিন বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা করা হচ্ছে, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেকোনো প্রয়োজনে সবসময় সাথে আছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।’
ভেন্ডিং মেশিন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কি ধরনের উদ্যোগ ছিলো এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য আমরা বারবার বলে আসছিলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেন্ডিং মেশিন চালু করার জন্য।
এ বিষয়ে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি যাতে ভেন্ডিং মেশিন দ্রুত চালু করা হয়।
ভেন্ডিং মেশিন শিক্ষার্থীদের জন্য কতটুকু উপকারী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা এর সুবিধা ২৪ ঘন্টা পাবে। যেকোনো সময় নিজের হলেই নিতে পারবেন এই ভেন্ডিং মেশিনের সুযোগসুবিধা। সফট ড্রিংকস, শুখনো খাবারের জন্য যেতে হবে না দোকানে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক জামসেদ সবুজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে ভেন্ডিং মেশিন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ অনেক আগে থেকেই ভেন্ডিং মেশিন চালু করার জন্য চেষ্টা করছিলো।
আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সাথেও কয়েকবার বসে কথা বলেছিলাম এ বিষয়ে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলে ভেন্ডিং মেশিন যুক্ত হবে। এই মেশিনে কেক, চিপ্স, সফট ড্রিংকস, আইসক্রিমসহ শুকনো খাবারগুলো খুব সহজেই ক্রয় করা করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তানভির বলেন, প্রশাসনের এরকম সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা খুব উপকৃত হবে। হালকা খাবারের জন্য এখন আর হল এর সামনে দোকানগুলোতে ভিড় জমানো লাগবে না। হলের ভিতরে ভেন্ডিং মেশিন থাকলে খুব সহজেই সেখান থেকে খাবার সংগ্রহ করতে পারবো।