শিক্ষা কর্মকর্তার ক্ষমতা বলে কথা!

প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০২৪; সময়: ৩:৩১ pm | 
খবর > আঞ্চলিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, মান্দা : সরকারি নির্দেশনা কিংবা দাপ্তরিক কোনো পত্র নেই। এর পরও বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত করে চলছে শিশু শিক্ষার্থীদের চক্ষু পরীক্ষার ক্যাম্পেইন। এরই মধ্যে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

‘মক্কা চক্ষুসেবা ফ্যাকো সেন্টার’ নামের বেসরকারি একটি সংস্থাকে দিয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কাজটি করিয়ে নিচ্ছেন নওগাঁর মান্দা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার শামসুজ্জামান।

সরকারি নির্দেশনা ও দাপ্তরিক পত্র না থাকায় ওই সংস্থাকে ক্যাম্পেইন আয়োজনের অনুমতি দেয়নি উপজেলার ৫৫ নম্বর গাইহানা কৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনা পারভীন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষক আমিনা পারভীনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার শামসুজ্জামান।

এটি শিক্ষা কর্মকর্তার ক্ষমতার অপব্যবহার কি না এনিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অভিভাবকসহ সচেতন মহলে। তোলপাড় চলছে উপজেলাজুড়ে।

উপজেলার গাইহানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনা পারভীন বলেন, ‘মক্কা চক্ষুসেবা ফ্যাকো সেন্টারের অর্গানাইজার পরিচয়ে এক ব্যক্তি আমার প্রতিষ্ঠানের শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্যাম্পেইন করার কথা বলে। কিন্তু সরকারি নির্দেশনা কিংবা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার এ সংক্রান্ত কোনো পত্র না থাকায় আমি অনুমতি দেইনি।’

প্রধান শিক্ষক আমিনা পারভীন আরও বলেন, ‘এ কারণে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। গতকাল রোববার ডাকযোগে এ সংক্রান্ত একটি পত্র পেয়েছি। তিন কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে বানিসর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চককানু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চক্ষুসেবা ক্যাম্পেইন করেছে ‘মক্কা চক্ষুসেবা ফ্যাকো সেন্টার’ নামের সংস্থাটি। বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মাইকিং করে এলাকার লোকজনকে নিয়ে এসে ওই ক্যাম্পেইনে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, বিদ্যালয় চলাকালিন ক্যাম্পেইনে বহিরাগতদের আগমনে বাড়তি হইচই পড়ে। এতে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট ও পাঠদান ব্যাহত হয়। বিদ্যালয়ে চক্ষুসেবা ক্যাম্পেইনের আয়োজন হটকারী সিদ্ধান্ত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার শামসুজ্জামান বলেন,‘শিশু শিক্ষার্থীদের চক্ষু পরীক্ষার বিষয়ে সরকারি কিংবা অধিদপ্তরের কোনো নির্দেশনা নেই। তাদের ভালোর জন্যই ব্যক্তিগতভাবে এ উদ্যোগ নিয়েছি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এ ক্যাম্পেইন করা হয়েছে। এটি কোনো বাধ্যতামুলক বিষয় নয়।’

কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রসঙ্গে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আমার নির্দেশ অমান্যসহ উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। তাই তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন