আন্দোলনকারীদের রাজপথ থেকে সরে যেতে বললেন রাজশাহীর সমন্বয়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক : কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রাকিব হাসান অর্নব রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে আন্দোলনকারীদের রাজপথ থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তার এই আহ্বানে সাড়া না দিয়ে শিক্ষার্থীরা সাহেব বাজার এলাকা না ছাড়লে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর আলুপট্টিতে আওয়ামী লীগের অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাফিন হাসান অর্নব বলেন, আমি কোটা আন্দোলনের সঙ্গে ছিলাম। সমন্বয়কদের মধ্যে একজন। গত পরশু রাজশাহীতে সবচেয়ে বড় মভটা হয়েছিল। সেখানে স্লোগানদাতাদের মধ্যে আমি অন্যতম একজন ছিলাম। সত্যি কথা বলতে, সেটি আমরা সফল করতে পারেনি। এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অনেক বিশৃঙ্খলাকারী ঢুকে পড়ে। তারাই বিভিন্ন ক্ষয়-ক্ষতি করেছে। কারা এরা। কিভাবে তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলো। সেটা আর আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নেই।
মাইকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমার এই মাইকের আওয়াজ যতদূর যাচ্ছে, ততদূর থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের আমি জিরো পয়েন্ট থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
এ সময় তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতিও আহ্বান জানান এই ছাত্রনেতা। তিনি বলেন, তারপরও আমি বিশ্বাস করতে চাই, সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেবে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যেভাবে বলেছেন সেভাবে যথাযথ ভাবে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করবেন।
এ সময় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনসহ আওয়ামী লীগের নেতা উপস্থিত ছিলেন।
এর দেড় ঘন্টা পর রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় মহিলা কলেজের সামনে পুলিশের গাড়ির ওপর হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এসময় পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়া হয়। পুলিশের গাড়ি থেকে নেমে ড্রাইভার নিজের পান রক্ষা করে। পরে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুঁড়ে। এ ঘটনায় তিন পুলিশসহ আটজন আহত হন। আহতদের মধ্যে পাঁচজন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর ১টার দিকে রাজশাহীর নিউ মার্কেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিলে তারা অংশ নেয়। মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মহিলা কলেজের সামনে পুলিশের গাড়িতে হামলা করে। তারা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাট্কেল ছুড়ে। এতে তিন পুলিশ আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। প্রায় ১০ মিনিট ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। এসময় পুলিশ কয়েক রাউন্ট রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে।