ট্যাটু করালে কি ক্যানসার হতে পারে?

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৪; সময়: ৩:৫৫ pm | 
খবর > লাইফস্টাইল

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বর্তমান যুগে অসংখ্য মানুষ গায়ে ট্যাটু আঁকাচ্ছেন। প্রিয়জনের নাম, প্রিয় তারিখ কিংবা প্রিয় উক্তিসহ প্রিয় কারো ছবি শরীরে খোঁদাই করছেন। নামীদামী খেলোয়াড় থেকে শুরু করে অনেক তারকাও শরীরে ট্যাটু করান। বর্তমানে অনেক সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞই মনে করছেন, ট্যাটু করলে নাকি ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়ে। আসলেই কি তাই? চলুন জেনে নিই-

ট্যাটু আর ক্যানসারের সম্পর্ক নিয়ে এপর্যন্ত বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দুটো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ২০২০ সালে ব্রিটিশ কলম্বিয়া ও কানাডার প্রায় ১৫১৮ জন অধিবাসীর উপর একটি গবেষণা করা হয়। ফলাফলে জানা যায়, ট্যাটুর সঙ্গে ক্যানসারের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই।

অপরদিকে, ২০২৪ সালে সুইডিশ ন্যাশনাল ক্যানসার রেজিস্ট্রির প্রকাশিত গবেষণাপত্র বলছে অন্য কথা। ১১৯০৫ জনের ওপর করা এক গবেষণা শেষে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্যাটু করালে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে প্রায় ২১ শতাংশ।

চিকিৎসকের মতে, ট্যাটু করার জন্য ব্যবহৃত কালিতে বিভিন্ন জৈব এবং অজৈব পদার্থ মেশানো থাকে। অনেক কালিতে থাকে আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম, কোবাল্ট, লেড, নিকেল এবং পলিসাইক্লিক অ্যারোম্যাটিক হাইড্রোকার্বনসের মতো ক্ষতিকর সব উপাদান। এই ধরনের রাসায়নিক শরীরের অভ্যন্তরে পৌঁছে একাধিক ক্ষতি করতে পারে। এমনকী ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ায়। তাই চেষ্টা করুন ট্যাটুর থেকে দূরে থাকার।

অনেকে শরীরের বিভিন্ন অংশে ট্যাটু করান। শরীরে একাধিক ট্যাটু করার কারণে হতে পারে স্কিন ক্যানসার। এক্ষেত্রে দেহের কোনো স্থান হঠাৎ করে সাদা হয়ে যেতে পারে, চামড়ার ওপরের অংশ ফুলে উঠতে পারে কিংবা কোনো ক্ষত সারতে না চাইতেও পারে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। বায়োপসি করলেই রোগ ধরা পড়ে সহজে।

শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে অসংখ্য লসিকা গ্রন্থি। এই গ্রন্থিগুলো কিছু লসিকানালীর মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত থাকে। দেখা গেছে, বহু ক্যানসার লসিকাগ্রন্থির মধ্যেই লুকিয়ে থাকে। এমনকী তা লসিকানালীর মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এটি আতঙ্কের বিষয়। ট্যাটু করার কারণে এই গ্রন্থি ও নালীতেও ক্যানসার পৌঁছে যেতে পারে। একে লিম্ফোমা ক্যানসার বলে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্যাটু না করাই হবে সবথেকে বুদ্ধিমানের কাজ। আর একান্তই যদি করতে হয়, সেক্ষেত্রে কোনো উন্নত ট্যাটু পার্লার থেকে দামি কালি ব্যবহার করে ট্যাটু করান। এতে সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা কমবে। এরপরও যদি ক্যানসার হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজন মতো সার্জারি, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপির চিকিৎসার মাধ্যমে রোগের সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন