পুঠিয়া প্রাণিসম্পদ অফিসের বিরুদ্ধে প্রক্লপের টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ 

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৪; সময়: ৮:০৬ pm | 
খবর > রাজশাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া : রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্প’ (এলডিডিপি) কর্তৃক পরিচালিত দুইটি ছাগলের পিজি সদস্যদের মধ্যে নিম্নমানের  ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এরইমধ্যে বানেশ্বর ইউনিয়নের দিগলকান্দি ও শিলমাড়িয়া এলাকায় পিজি সদস্য প্রত্যেককে একটি করে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘরের জন্য ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ। প্রকল্পের নকশা অনুযায়ী সদস্যদের নিজ তত্ত্বাবধানে ঘর নির্মাণ করার কথা থাকলেও দিঘলকান্দির ৩৪ সদস্যের  পিজিতে তা করতে দেওয়া হয়নি। আবার এমনও সদস্য বাছাই করেছে যে তারা ঘর নিয়েছে অথচ সেই ঘরে ছাগল না রেখে রেখেছে ধানখরি ও পাট শলা।

উপজেলার প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ তানভীর আনজুম অনিক  কর্তৃক নির্ধারিত ব্যক্তিকে দিয়ে ঘর নির্মাণের কাজ করা হয়েছে। আর প্রতিটি ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দের সম্পূর্ণ অর্থ প্রকল্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তা প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে সম্পূর্ণ টাকা সংগ্রহ করে নেন। এতে করে প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দের পুরো অর্থ ব্যয় না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। প্রায় ১ বছর আগে ছাগলের ঘর নির্মাণে অনিয়ম ও বরাদ্দের টাকা সম্পূর্ণরূপে ব্যয় না করার অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। মূলত ঔ ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তার নিকটজনকে দিয়ে ঘর নির্মাণের কাজ করিয়েছেন। ঘর নির্মানে প্লাস্টিকের পরিবর্তে বাঁশের মাচা দিয়ে ঘর তৈরি করে  সদস্যদের কাছ থেকে সম্পূর্ণ টাকা নিয়ে তা পুরোটা ব্যয় দেখিয়ে যথাযতভাবে কাজ না করিয়ে অর্থ বাঁচিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন অসহায় গরীব মানুষের।

আর এসব ব্যাপারে পিজির সদস্যদের কাউকে কিছু না বলতে ভয়ভীতিও প্রদর্শন করা হয় বলে জনানা সদস্য ও স্থানীয়রা।

দিঘলকান্দির ছাগলের পিজির সভাপতি  মিনা বেগম এই প্রতিবেদককে বলেন, ঘর নির্মাণের বরাদ্দের সম্পূর্ণ টাকাই সব সদস্যরাই অফিসের লোকের হাতে তুলে দেয়। স্যারেরা মিস্ত্রী ঠিক করে দিয়েছিল তারা এই ঘর তৈরি করেছে। এই ঘর তৈরি করতে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান।

স্থানীয় রিপন নামের একজন জানান এই ঘর তৈরি করতে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাকি টাকা গুলো পুঠিয়া প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার আত্মসাৎ করেছে।

ছাগল পিজির ক্যাশিয়ার সুমি জানান, ঘর নির্মাণে সব টাকা না লাগলেও তারা ব্যয় দেখাচ্ছে। এসব ব্যাপারে বুঝে নেওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। কিছু বলতে গেলে আগামীতে আর কোনো সুযোগ-সুবিধা দেবে না বলে জানায়। আগে তো আমরা বুঝতে পারিনি এত কম টাকায় ঘর তৈরি করে দিছে। এখন আবার বললে তো সরকারি সুবিধা যতটুকু পায় আর তাও দিবেনা, তাই বলে লাভ কি।

বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আতাবুর রহমান জানান, আমার ওয়ার্ডে ছাগল পিজির মত এমন একটি প্রক্লপ এসেছে কিন্তু আমি জানি না। পরে দেখে জানলাম এই একটি ঘর তৈরি করতে তারা ২৫ হাজার টাকা নিয়েছে। অথচ এই একটি ঘর তৈরি করতে সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হবে। বাকি ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা পুঠিয়া প্রাণিসম্পদ অফিসের লোকজন আত্মসাৎ করেছে ।

ততকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তানভীর আনজুম অনিক বলেন, সে তো ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রক্লপ এতদিন পরে কেন। ঘর তৈরিতে প্লাস্টিকের পরিবর্তে বাঁশের মাচা ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। অনেক দিন হলো যদি বাঁশের মাচা তৈরি করে থাকে তাহলে এখন তারা সংস্কার করে নিবে। ছাগল পিজির সদস্যরা যে অভিযোগ করেছে তারা সে সময় করেনি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.মোঃ রোকনুজ্জামান বলেন, এই এ প্রকল্পের ছয় থেকে সাত মাস পরে আমি এসেছি। এরই মধ্যে ছাগলের ঘর নির্মাণ নিয়ে যে অভিযোগ প্লাস্টিকের পরিবর্তে বাঁশের মাচা দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। যদি বাশের মাচা দেওয়ার কথা না সদস্যরা নিজ দায়িত্বে হয়তো করেছে। আমি নিজ দায়িত্বে যাব। দেখে  যদি কোন অনিয়ম করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন