কুষ্টিয়ায় পুলিশের দুই এএসআই নিখোঁজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিবেদক : কুষ্টিয়ায় কুমারখালীতে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে ইলিশ শিকাররত জেলেদের হামলায় পুলিশের দুজন এএসআই নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ ও স্থানীয় দুই ইউপি সদস্যর আহত হয়েছেন। নিখোঁজ তুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন, এএসআই সদরুল আলম ও এএসআই মুকুল হোসেন।
জেলেদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা চাওয়ায় এ হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সোমবার ভোর ৪টার দিকে কুমারখালীর বেড় কালোয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধারে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সোমবার ভোরে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের সহযোগিতায় ৬ জন পুলিশ নৌকা নিয়ে পদ্মা নদীতে যায়। এ সময় তারা অভিযানের নামে জেলেদের মাছ লুটে নেওয়ার চেষ্টা করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে জানান তার নৌকা থেকে ৫ কেজি ইলিশ নিয়ে নাই ইউপি সদস্য এবং পুলিশ কর্মকর্তারা। তার দাবি এর আগের রাতেও তার নৌকা থেকে ৮ কেজি ইলিশ নিয়ে যায় ওই পুলিশ সদস্যরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বেশ কয়েকটি নৌকা থেকে ১৫ থেকে ২০ জন তাদের উপর হামলা চালায়। এতে পুলিশের নৌকা ডুবে যায় গেলে পুলিশের এএসআই সদরুল আলম ও এএসআই মুকুল হোসেন নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন। এতে ইউপি সদস্য মো. সেলিম ও আনোয়ার হোসেন টিটন এবং এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা সবাই নদী সাঁতরে তীরে আসতে সক্ষম হন।
স্থানীয়রা বলছেন, ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চললেও পদ্মা নদীতে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে জেলেরা। স্থানীয় জেলে ইয়ারুলের নেতৃত্বে ইলিশ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞার পর থেকে প্রতি রাতেই বিপুল পরিমাণ ইলিশ ধরে আসছেন স্থানীয় জেলেরা। তুলনামূলক কম মূল্যের গোপনে এসব মাছ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়।
এদিকে নিখোঁজ দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধারে পদ্মানদীতে অভিযান চালানো হচ্ছে। ডুবুরী এবং নৌ পুলিশের সদস্যরা একযোগে নিখোঁজ দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এদিকে জেলেদের অভিযোগ অস্বীকার পুলিশ বলছে, কুমারখালী উপজেলার একটি ইউনিয়ন রয়েছে। পুলিশ সদস্যরা নৌকায় করে সেখানে আসামী ধরতে যায়। পথে জেলেদের নৌকার সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশের নৌকাটি ডুবে যায়। এতে পুলিশ দুই সদস্য নিখোঁজ হন। কুমারখালী থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, পদ্মার ওপারে চরসাদিপুর ইউনিয়নে আসামি ধরতে গিয়েছিল ওই পুলিশ সদস্যরা। সেখান থেকে নৌকায় করে ফেরার পথে পদ্মা নদীতে জেলেদের নৌকার সাথে সংঘর্ষ হয় তাদের নৌকার। এই দুর্ঘটনায় পুলিশের নৌকাটি ডুবে গেলে দুজন এএসআই নিখোঁজ হন। বাকিরা নদী তীরে ফিরতে সক্ষম হন।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান দাবি করেন, ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি ধরতে ওই পুলিশ সদস্যরা পদ্মা নদীর ওপারে গিয়েছিলেন। তবে কিভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।পুলিশের মাছ লুটের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এমন খবর তাদের জানা নাই। তবে বিষয়টি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হবে। রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিস্তারিত জানা যাবে। তিনি বলেন দুই পুলিশ সদস্যর সন্ধানে নদীতে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে।