মহাদেবপুরে বালুমহাল নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে ভোগান্তিতে কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, মহাদেবপুর (নওগাঁ) : নওগাঁর মহাদেবপুরে আত্রাই নদী বালুমহাল নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের দ্বন্দ্বে সরকারি রাস্তার কালভার্ট, ব্রিজ ভাংচুর ও একাধিক স্থানে খনন কওে রাস্তা নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে। এতে ফসলের মাঠে যেতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। কৃষিপণ্য আনা-নেয়ায় ব্যবহৃত যানবাহন ও ফসলের পরিচর্যা করতে না পাড়ায় লোকশানের আশংকা করছেন তারা।
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার একমাত্র নদী আত্রাই। এ নদীর বালুমহাল ইজারা নেন নওগাঁ সদও উপজেলার আলহাজ¦ মোঃ রফিকুল ইসলামের স্ত্রী মোছাঃ মালেকা পারভীন। তাঁর কাছ থেকে হাতুড় ইউনিয়নের দেওয়ানপুর গ্রামের সুলতানপুর মৌজার বালুমহাল সাব-ইজারা নেন আবুল কালাম আজাদ বাবু ও আফজাল হোসেন এবং নূরপুর মৌজার বালুমহাল সাব-ইজারা নেন আব্দুল জলিল ও জাহাঙ্গীর আলম। এ বালুমহাল নিয়ে গত ৫ আগষ্টের পর থেকে বিএনপির এ দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ দ্বন্দ্বের জেরে সেখানে একাধিকবার মারামারির ঘটনাও ঘটে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আবুল কালাম আজাদ (বাবু), জলিল ও জাহাঙ্গীরকে বালু উত্তোলনে বাঁধা দেয়ার লক্ষ্যে সরকারি রাস্তার কালভার্ট, ব্রিজ ভাংচুর ও একাধিক স্থানে খনন কওে রাস্তা নষ্ট করেছে। তাদের দ্বন্দ্বে ভোগান্তিতে পড়েছে ৫টি গ্রামের অন্ত্যন্ত ১০ হাজার কৃষক। রাস্তার কালভার্ট, ব্রিজ ভাংচুর করার ফলে ফসলের মাঠে যেতে না পেওে ফসলের পরিচর্যা ও কৃষিপণ্য আনা নেয়া করতে পাড়ছেন না তারা। এতে উৎপাদন ব্যহত ও লোকশানের আশংকা স্থানীয় কৃষকদের। দেওয়ানপুর গ্রামের কৃষক আলম হোসেন জানান, রাস্তা নষ্ট হওয়ায় তার উৎপাদিত কলা মাঠ থেকে আনতে পাড়ছেন না। ফলে তার কলা মাঠেই পাকতে শুরু করেছে। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান না হলে কলা নষ্টের আশংকা করছেন তিনি। ওই এলাকার জামেলা বেগম ও হাফিজুর ইসলাম জানান, রাস্তার কালভার্ট ভেঙ্গে ফেলায় গবাদী পশু মাঠে নিয়ে যেতে পারছেন না তারা। এবং ফসলের পরিচর্যার জন্য মাঠেও যেতে পারছেন না তারা। এতে ফসল উৎপাদন ব্যহত হবার চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে তাদের।
বালুমহাল ইজারাদার আব্দুল জলিল ও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তাদের দুপক্ষের বালুউত্তোলনের স্থান পাশাপশি হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর জেওে গত বৃহস্পতিবার রাতে আবুল কালাম আজাদ বাবু ও তার বাহিনী আমাদের বালু উত্তোলনের মেশিন ভাংচুর, লুটপাট ও রাস্তা নষ্ট করে দিয়েছে। এতে আমরা লোকশানে পড়েছি। এর দ্রুত সমাধানসহ দোষীদের বিচার চান তারা। এ বিষয়ে আবুল কালাম আজাদ বাবু তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ সকল কাজ তারা নিজেরাই করে আমাদেরকে মিথ্যা দোষারোপ করছেনস। এ বিষয়ে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হাশমত আলীজানান, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি। তবে সরকারি রাস্তা নষ্টের প্রমাণ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।