রাজশাহীর এক কলেজে তিন অধ্যক্ষ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৪; সময়: ৬:১৮ pm | 
খবর > রাজশাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর একটি কলেজের তিনজন অধ্যক্ষ রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ভারপ্রাপ্ত, একজন পূর্ণাঙ্গ ও একজন স্বঘোষিত। এই তিনজনের মধ্যে দুজনের মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। গত বুধবার রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা অফিসের ভেতরেই একজন আরেকজনকে চড় মেরেছেন। ঘটনার পরে মারপিটের শিকার জয়নাল আবেদিন নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালীতে অবস্থিত আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।

গত ৫ আগস্টের পর থেকে জয়নাল আবেদিন কলেজে অনুপস্থিত। আর অভিযুক্ত সিরাজুল হক কলেজের ভুগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি এখন কলেজের ‘স্বঘোষিত’ অধ্যক্ষ। তিনি নিজেকে অধ্যক্ষ দাবি করলেও কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাকে এই দায়িত্ব দেননি। ইউএনও দায়িত্ব দিয়েছেন আরেকজন শিক্ষককে। তবে ঐ শিক্ষককে চেয়ারে বসতে দেননি সিরাজুল ইসলাম। তবে এখন জয়নাল আবেদিন ও সিরাজুল হক- দুজনেই নিজেদের অধ্যক্ষ দাবি করছেন।

লিখিত অভিযোগে জয়নাল আবেদিন নিজেকে অধ্যক্ষ হিসেবেই পরিচয় দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার (মাউশি) রাজশাহী আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়ের চতুর্থ তলায় কর্মচারীদের কক্ষে অবস্থান করছিলেন। তখন সহকারী অধ্যাপক সিরাজুল হক পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। তাঁকে প্রাণনাশেরও হুমকি দেয়া হয়।

জয়নাল আবেদিনকে চড়-থাপ্পড় মারার বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজুল হক প্রথমে দাবি করেন, বুধবার তিনি শিক্ষা ভবনেই যাননি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থাকার কথা জানালে তিনি বলেন, ‘তাহলে আমাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন না করলেই খুশি হবো। আমি মিথ্যা কথা বলতে পারব না।’

নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘জয়নাল আবেদিন অভিযোগ করতে আসবেন, এটা জানতাম। পরে অভিযোগ দিয়ে গিয়েছেন কি না তা জানি না। অভিযোগ দিয়ে গেলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গভর্নিং বডির সভাপতি ও ইউএনও সোহরাব হোসেন বলেন, ‘কলেজে যে এখন কে অধ্যক্ষ সেটা নিয়েই জটিলতা চলছে। জয়নাল আবেদিন অনুপস্থিত থাকলেও তিনি আবার আলাদা কমিটিও অনুমোদন করিয়ে এনেছেন আমাকে না জানিয়ে। এসব ব্যাপারে করণীয় জানতে চেয়ে আমি জেলা প্রশাসক স্যারকে লিখেছিলাম। জেলা প্রশাসন আবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে এখনও কোন নির্দেশনা আসেনি।’
রাজশাহী ভ্রমণ

শিক্ষা ভবনে জয়নাল আবেদিনকে আরেক শিক্ষকের মারধর করার বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘এ রকম ঘটনা ঘটলে তো সেটা ফৌজদারি অপরাধ। এর জন্য পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। সেক্ষেত্রে যদি সিরাজুল হক অভিযুক্ত হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন