গুরুদাসপুরে বিদেশী জাতের কুল চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে

এস এম ইসাহক আলী রাজু, গুরুদাসপুর : নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় বিদেশী জাতের কুল বড়ই চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ভাল ফলন হওয়ায় ও বিক্রিতে ভাল দাম পাওয়ায় চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। কুলচাষীরা কুল বাগানে গাছ পরিচর্যা ও বাজারজাত করণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফলে অনেকের বেকারত্ব জীবনে ফিরেছে কর্মসংস্থান।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষিবিভাগের তথ্যমতে জানা যায়, এবছর উপজেলায় ৪৭ হেক্টর জমিতে বিদেশী জাতের কুল চাষেরে আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ২ হেক্টর বেশি। বাগানের সংখ্যা ৪৩টি। এমন ফল দেখতে যেমন লোভনীয় খেতে সুমিষ্ট। লাভজনক আবাদ হওয়ায় উৎসাহী হয়ে প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে এমন কুল আবাদ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গুরুদাসপুর উপজেলা জুড়ে খন্ড খন্ড ভাবে গড়ে উঠেছে বিদেশী জাতের ৪১টি কুল বাগান। তবে নাজিরপুর ইউনিয়নের মামুদপুর, গোপীনাথপুর, মাহমুদপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে বেশি দেখা যায় এমন কুল বাগান। প্রতিটি বাগানে থোকায় থোকায় ধরেছে বিদেশী জাতের ভারত সুন্দরী, কাশমেরী, আপেল কুল ও নারকেল কুল বড়ই। কুলের ভারে নুইয়ে পড়েছে গাছের ডালপালা। কুলের আকার ও রংয়ের ভিন্নতায় অপরুপ সেজেছে এসব বাগান। এমন বাগান দেখতে প্রতিদিন ভীড় করছেন দর্শনার্থীরা।
গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের কুল চাষী মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, বেকারত্ব জীবনে প্রথমে ছোট পরিসরে শখে এক খন্ড জমিতে বিদেশী নারকেল কুল চারা দিয়ে শুরু করি। পরবর্তীতে সাফল্য আসায় কৃষি অফিসের পরামর্শে বৃহতর আকারে ৫বিঘা জমি লিজ নিয়ে ভারত সুন্দরী, কাশমেরী ও নারকেল এই তিন জাতের কুল তিনটি বাগান করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে ৭ লাক্ষ টাকা। বাগানে কুলের ফলন ভালই হয়েছে। সাফলতা আসবে এমন আশাব্যক্ত করেন তিনি।
এছাড়াও কুল চাষী, মোঃ সাদ্দাম হোসেন, মোঃ তজের আলী, মোঃ রতন মিয়া, মোঃ মহাসিন আলী, মোঃ আলম হোসেন, মোঃ সাজাহান আলী ও মোঃ শরীফ হোসেন জানান, গত বছর ছোট পরিসরে করায় ভাল ফলন হয়েছিল। সাফল্য আসায় বাণিজ্যিক ভাবে এখন কুল বাগান করেছি। প্রতিটি বাগানে বল সুন্দরী, নারকেল কুল,ও ভারত সুন্দরী জাতের কুল গাছে থোকায় থোকায় ধরেছে। কুল বড় হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে বাজারজাত শুরু করেছি। বাজার দরও ভালো পাচ্ছি।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হারুনর রশিদ জানান, উপজেলায় এবছর ৪৭ হেক্টর জমিতে বিদেশী জাতের ৪৩টি কুল বাগান হয়েছে। কুল চাষীদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছে কৃষিবিভাগ। তিনি মনে করেন, এরকম কুল চাষে কৃষিতে অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়েছে।