পেশাগত সমস্যা সমাধানে কালক্ষেপণের প্রতিবাদে আইডিইবি’র সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক, কচুয়া : প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশের আলোকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের পেশাগত সমস্যাদি সমাধান ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) ২০২০ এবং ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ এর সংশোধিত গেজেট দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময়ে প্রকাশিত না ইনস্টিটিউশন হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)’র নেতৃবৃন্দ।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে আইডিইবি’র সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান বলেন, ২০১২ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রধানমন্ত্রী বিতর্কিত ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধামালা ও বিএনবিসি সংশোধনপূর্বক গেজেট প্রকাশ, প্রাথমিক নিযুক্তিকালে অন্যান্য পেশাজীবীদের ন্যায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের স্পেশাল ইনক্রিমেন্ট প্রদান, সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানীসমূহে কর্মরত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার উপ-সহকারী প্রকৌশলী/সমমানের পদ থেকে সহকারী প্রকৌশলী/সমমানের পদে পদোন্নতির কোটা ৫০% এ উন্নীতকরণসহ সর্বোচ্চ পদ পর্যন্ত পদোন্নতি অবারিত করা, পলিটেকনিক, টিএসসি, এসএসসি (ভোক) এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণলাধীন টিটিসির শিক্ষক-কর্মচারির শূন্য পদ পূরণসহ শিক্ষক সংকট নিরসন, স্থায়ীকরণ, কারিগরি শিক্ষার শিক্ষার্থীদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেনিং ভাতা ও বৃত্তির টাকা আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশের পুরোপুরি বাস্তবায়ন, পলিটেকনিক শিক্ষায় বিদ্যমান ক্লাসরুম, ল্যাব/ওয়ার্কসপ, কাচামাল সংকট নিরসনসহ বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ন্যূনতম বেতন স্কেল নির্ধারণ ও পদবী প্রদানের নির্দেশনা দেন।
সর্বশেষ ১ সেপ্টেম্বর’২২ তারিখে আইডিইবি’র জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তাঁর নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবকে দায়িত্ব প্রদান করেন। কিন্তু দীর্ঘ ৫ অতিবাহিত হলেও দাবিসমূহ বাস্তবায়নে কার্যত কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বরং, সরকারের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা অপশক্তির ইশারায় সমস্যা সমাধানে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। বিক্ষুদ্ধ করে তোলা হচ্ছে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র শিক্ষকদের।
সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ হতে ২ মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নসহ ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পেশাগত ৪ দফা দাবি বাস্তবায়নে সকল জেলায় প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কারিগরি শিক্ষার সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলা হয় সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে মোট শিক্ষার্থীর ৫০% কে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় এনরোলমেন্ট করার লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে। তবে, আমরা অতীব দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। সংশ্লিষ্টরা আপনারা জেনে হতবাক হবেন, বর্তমানে ৭০% শিক্ষকের পদ শূন্য রেখে দেশের পলিটেকনিক, টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে বিগত ৮/১০ বছর থেকে শিক্ষাক্রম চলছে। জনশক্তি ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ব্যুরোর অধীন টিটিসিতেও প্রায় ৬০% শিক্ষক পদ শূন্য। যা দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে অন্তরায়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন আইডিইবি’র সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আইডিইবি’র সভাপতি এ কে এম এ হামিদ।
এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম আব্দুল মোতালেব, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুছ, সিরাজুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক শাহজাহান কবীর, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ইদরিস আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মুন্তাসীর হাফিজ, জনসংযোগ ও প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, চাকরি ও আইন বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ দস্তগীর, সহ-জনসংযোগ ও প্রচার সম্পাদক জি এম আকতার হোসেন, ঢাকা জেনিকের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ খবির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান প্রমুখ।