রাজশাহীর সেই কর কর্মকর্তার জামিন নামঞ্জুর

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে চিকিৎসকের কাছে নেয়া ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ দুদকের হাতে গ্রেপ্তার উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভুঁইয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে তাকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে বিচারক আশিকুজ্জামান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গ্রেপ্তার মহিবুল ইসলাম ভুঁইয়া রাজশাহী কর অঞ্চলের সার্কেল-১৩-এর উপ-কর কমিশনার। মঙ্গলবার তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করার পর তাকে সরাসরি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। বুধবার বেলা ১১টার দিকে তাকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। মহিবুলের বিষয়ে এজাহারের বাইরে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। এখন সব নিউজ পোর্টাল দেখব। বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করবেন। আসামির তদবিরকারকের সঙ্গে কথা বলবো। তারপর সিদ্ধান্ত নেব যে এই আদালতেই আবার জামিন আবেদন করবো, নাকি উচ্চ আদালতে যাব।
মঙ্গলবার ১০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে দুদকের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কর্যালয় ও বিভাগীয় কার্যালয়ের পক্ষ থেকে সাদাপোশাকে তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মহিবুল ইসলাম চিৎকার করলে দুদক কর্মকর্তারা তার কার্যালয়ের দরজা বন্ধ করে দেন। তখন কর ভবনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দুদক কর্মকর্তাদের ওপরে হামলা চালান।
দুদক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এ সময় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এতে তাদের চার-পাঁচজন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। এতে মহিবুল ইসলাম ভুঁইয়াও আহত হয়েছেন। তবে মহিবুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, তাকে দুদক কর্মকর্তারা মারধর করেছেন। তার টেবিলে রাখা টাকা তিনি ছুঁয়েও দেখেননি। কিন্তু দুদক কর্মকর্তারা তার ড্রয়ার থেকে টাকাগুলো উদ্ধার করেছেন।
দুদক বলছে, নগরের মাদারল্যান্ড ইনফার্টিলিটি সেন্টার ও হাসপাতালের মালিক ফাতেমা সিদ্দিকার পাঁচ বছরের ব্যাংকে লেনদেনের বিষয়ে ওই কর কমিশনার আপত্তি তোলেন। বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে গেলে ওই কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভুঁইয়া তার কাছে ৬০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে তা ৫০ লাখ টাকায় দফা হয়।
বিষয়টি জানিয়ে ফাতেমা সিদ্দিকা গত ২৯ মার্চ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে একটি অভিযোগ করেন। এই অভিযোগ নিয়ে দুদক রাজশাহী জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়ে যৌথভাবে কাজ করছিল। ফাতেমা সিদ্দিকা তার ৫০ লাখ টাকা চুক্তির অংশ হিসেবে প্রথম কিস্তির ১০ লাখ টাকা দিতে গিয়েছিলেন। এ সময় দুদকের পক্ষ থেকে ওই কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়।