ভোট এলেই ইসি সেজে প্রার্থীদের কল করতেন গিয়াস

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৩; সময়: ১০:১০ pm | 
খবর > বিশেষ সংবাদ

নিজস্ব প্রতিবদেক : রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনার সেজে এক ব্যক্তি কল দেন এক কাউন্সিলর প্রার্থীকে। মুঠোফোনে তিনি টাকার বিনিময়ে ওই প্রার্থীকে ভোটে জয়ী করার প্রতিশ্রুতি দেন। অন্যথায় ফলাফল পাল্টে দেওয়ার হুমকি দেন। এমন একটি প্রতারক চক্রের প্রধান ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ।

গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম মো. গিয়াস উদ্দিন। তিনি কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার পুটিবিলা গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল শুক্রবার ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে তাঁকে রাজশাহীতে আনা হয়। পুলিশ বলছে, ভোট এলেই ওই ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনার সেজে প্রার্থীদের কল দিয়ে ভোটের ফলাফল পাল্টানোর কথা বলেন।

গিয়াস উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আনিসুর রহমান সেখানে এসব তথ্য দেন। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) বিজয় বসাক, অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. রফিকুল আলম, রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৮ জুন রাজশাহী সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী আরমান আলীর মুঠোফোন নম্বরে একটি কল আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে নির্বাচন কমিশনার পরিচয় দিয়ে ভোট-সংক্রান্ত বিভিন্ন কথাবার্তা বলা হয়। সকাল ৮টা ২৪ মিনিটে আরেকটি নম্বর থেকে ফোন করে তাঁকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়। কথা না বললে ভোটের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এরপর সকাল ৮টা ২৯, ৮টা ৩৮ ও বেলা ১১টা ১৩ মিনিটে আবার কল করা হলেও আরমান আলী ফোন ধরেননি। তিনি বুঝতে পারেন, এটি প্রতারক চক্রের কাজ। এ ঘটনার পর আরমান আলী এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা থানায় পৃথক দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

পুলিশ কমিশনার মো. আনিসুর রহমান বলেন, জিডির পর মহানগর পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন দলের সহযোগিতায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল প্রতারক চক্রের সন্ধানে দেশের জায়গায় অভিযান চালায়। গ্রেপ্তার এড়াতে গিয়াস উদ্দিন বারবার অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। পরে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাতেই তাঁকে রাজশাহীতে আনা হয়। এ ঘটনায় গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ দাবি করে, গ্রেপ্তার গিয়াস উদ্দিন গাজীপুর সিটি নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলম, খুলনায় তালুকদার আবদুল খালেকসহ আরও দুজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে একই কায়দায় কল দিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ২০১২ সালে মহেশখালী থানায় দুটি ও ২০২১ সালে পল্টন থানায় একটি মামলা আছে।

মহানগর পুলিশ কমিশনার বলেন, নির্বাচন এলেই গিয়াস উদ্দিন প্রার্থীদের কল দেন। তিনি প্রার্থীদের ফোন নম্বর সাধারণত ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করেন। তিনি কল দিয়ে বলে থাকেন, সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর ফলাফল পাল্টে দেবেন। আবার কখনো বলেন, জয়ী করা হবে। এভাবে অর্থ হাতিয়ে নিতেন তিনি। তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন