সেই আঁখির শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : সেন্ট্রাল হসপিটালে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় মৃত্যুঝুঁকিতে পড়া মাহবুবা রহমান আঁখির শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন।
রোববার (১৮ জুন) সকালে ঢাকা পোস্টের সাথে আলাপকালে তিনি এই কথা জানান।
ইয়াকুব আলী বলেন, গতকাল রাতে চিকিৎসক দেখে গেছেন। তিনি জানিয়েছেন রোগীর কোনো ইমপ্রুভ হচ্ছে না, বরং অবনতির দিকে যাচ্ছে। আমরা অসহায় অবস্থায় হাসপাতালে অবস্থান করছি।
ফিরে আসার কোনো আশ্বাস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দিয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিকিৎসক এখন পর্যন্ত কোনো আশ্বাস দেয়নি। তারা বলছেন, তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এখান থেকে কামব্যাক করা কঠিন। একমাত্র যদি আল্লাহ চান, তাহলেই হবে।
ইয়াকুব আলী আরও বলেন, ব্লিডিংটা কিছুটা কমেছিল, কিন্তু গতকাল থেকে আবার বেড়ে গেছে। গতকাল আবার ৫ ব্যাগ রক্ত কালেকশন করে দিয়েছি। আজ দুপুর পর্যন্ত এগুলো চলবে। ডাক্তার আজকে আবার রোগীর পরিস্থিতি দেখে জানাবেন।
প্রসঙ্গত, সেন্ট্রাল হসপিটালে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় আঁখি নামে এক প্রসূতি মৃত্যুঝুঁকিতে পড়েছেন এবং তাদের নবজাতক সন্তান মারা গেছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রসূতির স্বামী ইয়াকুব আলী।
জানা গেছে, গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হসপিটালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল বলে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা।
প্রসব ব্যথা ওঠায় গত শুক্রবার (৯ জুন) রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হসপিটালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি করা হয় আঁখিকে। তখন ডা. সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। তারপরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন।
এ বিষয়ে আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার স্ত্রীকে যখন ওটিতে ঢোকানো হয় এবং নরমাল ডেলিভারির জন্য চেষ্টা শুরু করা হয়, তখনও আমি সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে আছেন কি না জানতে চাই। কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি আছেন এবং তিনি চেষ্টা চালাচ্ছেন। পরে জানতে পেরেছি ডা. সংযুক্তা সাহা ছিলেন না এবং তারা রোগীর কোনোরকম চেক-আপ ছাড়াই ডেলিভারির কাজ শুরু করে দেন।
এদিকে, এ ঘটনায় বুধবার ধানমন্ডি থানায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’র একটি মামলা দায়ের করেন ইয়াকুব আলী। মামলায় ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা, ডা. মুনা সাহা, ডা. মিলি, সহকারী জমির, এহসান ও হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজকে আসামি করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকেও আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর ১৫ জুন রাতে ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনা সাহাকে হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।