খবর পড়ছে এআই, চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে টিভি উপস্থাপকরা!

প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২৩; সময়: ১১:০৪ am | 
খবর > তথ্য-প্রযুক্তি

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : টিভির পর্দায় খবর পড়ছেন এক শাড়ি পরা তরুণী। চুল আঁটসাঁটো করে বাঁধা। কপালে ছোট্ট টিপ। কানে দুল। ঝরঝরে ইংরেজিতে নাগাড়ে কথা বলে চলেছেন। তবে কিছুক্ষণ ভালো করে দেখলে ধরা যাবে আসল ‘টুইস্ট’। সঞ্চালক রক্ত-মাংসের মানুষ নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অর্থাৎ, এআই-কে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে তাঁকে।

বিশ্বজুড়ে নানা কাজেই এআই-এর ব্যবহার দেখা গেছে। এবার খবর উপস্থাপনের ক্ষেত্রেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ হল। চ্যানেলের পক্ষ জানানো হয়েছে, এখন থেকে নিয়মিত খবর পাঠ করবেন এই সঞ্চালক। তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘লিসা’।

সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে লিসার সঙ্গে সকলের পরিচয় করিয়ে দেন চ্যানেলের কর্ণধার। ইংরেজি এবং ওড়িয়া ভাষায় খবর পড়বেন লিসা। তবে জানানো হয়েছে, লিসা ওড়িয়া ভাষা এখনো ভালো করে রপ্ত করে উঠতে পারেননি। তাকে ভাষা শেখানোর কাজ চলছে। ঝরঝর করে ওড়িয়া বলতে শিখে গেলেই আরও বেশ কিছু অনুষ্ঠানের দায়িত্ব তাকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। শুধু টিভির পর্দায় নয়, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিসাকে দেখা যাবে।

চ্যানেলের কর্ণধার জাগি মাঙ্গত পণ্ডার কথায়, ‘একটা সময় কম্পিউটার সবচেয়ে আশ্চর্যের জিনিস ছিল। তবে সেই যুগ আর নেই। সময় বদলেছে। এখন এআই-এর যুগ। সে কারণেই সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

এআই সঞ্চালকের উচ্চারণ, পরিবেশনা, উপস্থাপন অনেকেরই মনে ধরেছে। লিসার আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন দর্শকও। তারা জানিয়েছেন, লিসাকে নিয়ে তাদের আগ্রহ জন্মেছে।

গত মার্চ মাসে চালু হয়েছে বিশ্বের প্রথম শতভাগ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর নিউজ চ্যানেল নিউজজিপিটি। চ্যানেলটির সব কন্টেন্টই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে তৈরি। এটিকে মিডিয়াকর্মী ও তাদের চাকরির জন্য সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে দেখছেন অনেকে। যদিও নিউজজিপিটির সিইও অ্যালান লেভি এটিকে সংবাদ সম্প্রচারের ক্ষেত্রে গেম-চেঞ্জার হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

মিডিয়া সমালোচক শৈলজা বাজপেয়ীর মতে, এআই নিঃসন্দেহে সাংবাদিকতার ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে। তবে এর প্রভাবের পরিমাণ নির্ধারণ করার মতো সময় এখনো আসেনি।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শৈলজা বলেন, এআই অবশ্যই সাংবাদিকতায় স্থায়ী প্রভাব ফেলবে। তবে এটি কতটা গভীর হবে এবং কতটা পার্থক্য তৈরি করবে, তা বলার সময় আসেনি।

ভারতে টেলিভিশনের বিকাশ নিয়ে তিন দশক লেখালেখির অভিজ্ঞতা রয়েছে শৈলজার। তার বিশ্বাস, এআই বটগুলো হয়তো নিউজ বুলেটিন পড়তে পারে। তবে তারা আজকালকার উপস্থাপকদের মতো প্রতিক্রিয়া জানাতে এবং বিতর্ক পরিচালনায় (এখনই) সক্ষম হবে না।

এ বিশ্লেষকের মতে, এআই বটগুলো মানুষের পর্যবেক্ষণ ও অভিজ্ঞতার প্রতিলিপি করতে সক্ষম না-ও হতে পারে। তাই ব্যাখ্যামূলক সাংবাদিকতা, গ্রাউন্ড রিপোর্টিং এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা টিকে থাকার সম্ভাবনা বেশি। তিনি বলেন, আমাদের পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

 

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন