১১ বছরেও শেষ হয়নি মোহনপুরে রহিম হত্যা মামলার বিচার

নিজস্ব প্রতিবেদক, মোহনপুর : রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার পরকিয়া জেরে কৃষক আব্দুর রহিম @ আইফেল হত্যার ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার কাজ এখনও শেষ হয়নি। মামলাটি পূর্বপরিকল্পিত ভাবে পরস্পর যোগসাজসে খুন, চুরিও সহায়তার অপরাধে প্রথমে অজ্ঞাত আসামী করে মামলাটি দায়ের করা হয়।
যার মামলা নম্বর-০৯ তারিখ-২১/১২/১২ ইং। ধারাঃ ৩০২/৩৭৯/৩৪ দঃবিঃ হলেও পরবর্তীতে বিদ্যাধরপুর গ্রামের মৃত মহেন্দ্রনাথ প্রাং ছেলে খাঁড়ইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কাব্যতীর্থ) শ্রী রতন কুমার প্রাং, মোহনপুর বাজারে চা দোকানদার শ্রী অসিত কুমারের স্ত্রী চায়না রানীকে আসামী করে হত্যা চার্জশিট দেয় মামলার দায়িত্ব প্রাপ্ত এস আই বেলাল হোসেন।
মামলাটি রাজশাহীর বিশেষ দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন যার নম্বর-৪৯১/১৩। এ বিষয়ে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে ১২ ডিসেম্বর রাত অনুমানিক ৭.৩০ মিনিট আঃ রহিম মোহনপুর উপজেলার বিদ্যাধরপুর গ্রাম নিজ বাড়ী হতে চা পান করার জন্য বের হয়ে আর ফিরে আসেননি নিহত আব্দুর রহিম। তখন থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। পরের দিন সকালে একই গ্রামের জনৈক গঙ্গারানী বাকশিমইল ইউনিয়নের শাবাই বিলে ভেড়া চড়াতে গেলে শরিষা ক্ষেতে আঃ রহিম ওরফে আইফেল লাশ দেখতে পেয়ে ডাক- চিৎকারে গ্রামবাসীরা থানা পুলিশকে খবর দিলে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। ওই ঘটনার নওগাঁ জেলার শংকরপুর গ্রামের নিহতের বড় ভাই কালুর ছেলে আরব আলী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।
পরে ২০১৩ সালে ১৪ এপ্রিল এম আর ৫৬৪৮/১৩ জি আর ১৭৪/১২ অভিযোগ পত্র নং-১৯,মোহনপুর থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই বেলাল হোসেন হত্যা মামলা আইনে এ মামলায় চুড়ান্ত অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে দাখিল করেন। হত্যা মামলার মূল হোতা অভিযুক্ত আসামী শ্রী রতন কুমার প্রাং পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় এবং হত্যাকারী রতন কুমার প্রাং সাথে নিয়ে পুলিশকে তাঁর দেখানো মতে বিদ্যাধরপুর গ্রামের রাজশাহী নওগাঁ- মহাসড়কে রাস্তার পশ্চিম পাশ্বের্র খাল হতে নিহত আঃ রহিম ওরফে আইফেলের ব্যবহ্নত একটি কাল রংঙের সামফোনি মোবাইল সেট ও গ্রামীন সীম নম্বর-০১৭২২৭২৬৩৪৮ একটি যৌন উত্তেজক ড্রিক এর খালী বোতল ডবল হর্স,একটি কর্ক ও লেবেল বিহীন যৌন উত্তেজেক ড্রিক মাশরুম একটি খালী বোতল উক্ত মালামালগুলি ধূত আসামী শ্রী রতন কুমার প্রাং এর দেখানো মতে উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা বেলাল হোসেন আরো জানান আসামী রতন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি উপজেলা গেট হতে জনৈক সাইফুল ইসলাম দোকান হতে যৌন উত্তেজক ড্রিক ক্রয় করে। নিহত আঃ রহিম স্ত্রী নুরজাহান বেওয়া জানান ৮/৯ মাস কারাবাস পর জামিনে এসে রতন কুমার প্রাং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে তাঁর পরিবারকে সংখ্যালঘু দোহায় দিয়ে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করছেন যার কারণে তিনি বেশকিছুদিন ছেলের কর্মস্থল সিলেটে ছিলেন। কিছুদিন পূর্বে স্বামীর বসত ভিটা বিদ্যাধরপুর গ্রামে এসে বসবাস শুরু করছেন, তার স্বামীকে হত্যাকারী রতন লোকজনের মাধ্যমে নুরজাহান বেওয়াকে আপস-মিমাংশা হওয়ার জন্য টাকা লোভ দেখিয়ে প্রস্তাব পাঠায়।
আদালতের কাছে স্বামী হত্যার বিচার দাবী করেছেন। ছেলে নুর আমিনের স্ত্রী কামরুন নাহার কেয়ার জানায়, শাশুড়ী বিদ্যাধরপুর গ্রামে একা থাকতে ভয় পেত যদি স্বামীর মতো তাকেও খুন করে ভারতে পালিয়ে যাবে তাই বেশ কিছুদিন শাশুড়ীকে সঙ্গে সিলেটে রেখেছিলাম। বর্তমানে বিদ্যাধরপুর রয়েছে । নিহতের স্ত্রী নুরজাহান বেওয়ার বলেন, চায়না রানী সাথে রতন পরকিয়া গোপন মূর্হুত দেখে ফেলায় সু-পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে খুন করেছে রতন কুমার প্রাং। বিজ্ঞ আদালতের কাছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান। নিহতের ছেলে নুরে আমিন জানান, আমি চাকুরীর জন্য বাহিরে থাকতে হয়, বিজ্ঞ আদালতের কাছে রতন খুনীর জন্য আমি বাবাহারা হয়েছি হত্যাকারী রতন ও চায়নী রানীর ফাঁসি দাবি করেন।
রাজশাহী বিশেষ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মকবুল হোসেন খান জানান, মামলার স্বাক্ষী চলমান রয়েছে মামলার সকল কার্যক্রম শেষ হলে বিজ্ঞ আদালত রায় ঘোষনা করবেন। ।