জোহর, আসরে আওয়াজ করে কেরাত পড়লে করণীয়

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে মাগরিব, এশা এবং ফজরের নামাজে কিরাত আওয়াজ করে বা উচ্চস্বরে পড়া হয় আর জোহর ও আসরের নামাজে কিরাত আস্তে পড়তে হয়। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবেই নামাজ পড়েছেন।
আবু মামার (রহ.) সাহাবি খাব্বাব (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, রাসুল (সা.) জোহর ও আসরে কিরাত পড়তেন কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ পড়তেন।
আবু মামার পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কীভাবে বোঝা যেত? তিনি উত্তরে বলেন, রাসুল (সা.)-এর দাড়ি নড়াচড়া দেখে বোঝা যেত। (বুখারি, হাদিস : ৭৬০)
ইমাম নববী বলেন, ‘সুন্নত হচ্ছে— ফজর, মাগরিব ও এশার দুই রাকাতে এবং জুমার নামাজে উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করা। আর জোহর ও আসরের নামাজে এবং মাগরিবের তৃতীয় রাকাতে এবং এশার তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে চুপেচুপে তেলাওয়াত করা। সুস্পষ্ট সহিহ হাদিসের সঙ্গে মুসলিম উম্মাহর ঐকমত্যের ভিত্তিতে এসব বিধান সাব্যস্ত।’ (আল-মাজমু, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৮৯)
নামাজে আওয়াজ করে পড়ার অর্থ হল, অন্তত এতটুকু আওয়াজে পড়া যাতে নিজের পিছনে দাঁড়ানো কিছু লোক তা শুনতে পায়। আর নামাজে আস্তে পড়ার অর্থ হল, মাখরাজ আদায় করে জিহ্বা ও ঠোঁট নেড়ে ভালোভাবে উচ্চারণ করে পড়া।
সুতরাং এই ব্যাখ্যার আলোকে ইমাম যদি জাহরী (উচ্চস্বরে কেরাত বিশিষ্ট) নামাজে বড় এক আয়াত বা ছোট তিন আয়াত পরিমাণ আস্তে পড়েন তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে।
একইভাবে সিররী (নিচু স্বরে কেরাত বিশিষ্ট) নামাজে বড় এক আয়াত বা ছোট তিন আয়াত পরিমাণ কিরাত যদি এতটা উঁচু আওয়াজে পড়েন যে, পিছনে দাঁড়ানো লোকজনও শুনতে পায় তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে। তবে মনে রাখতে হবে, এ হুকুম কেবল জামাতে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
আর একাকী নামাজ আদায় করা ব্যক্তি জাহরী (উচ্চস্বরে কেরাত বিশিষ্ট) নামাজে চাইলে আস্তেও কিরাত পড়তে পারে। তবে তার জন্য উত্তম হল জোরে পড়া।
আর সিররী (নিচু স্বরে কেরাত বিশিষ্ট) নামাজে বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী একাকী নামাজ আদায়কারীর জন্যও আস্তে কিরাত পড়া ওয়াজিব। সুতরাং বড় এক আয়াত বা ছোট তিন আয়াত পরিমাণ কিরাত জোরে পড়লে সেক্ষেত্রে তাকে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে।
(রদ্দুল মুহতার ১/৫৩৫; শরহুল মুনয়াহ ৪৫৫-৪৫৬; আসসিআয়াহ ২/২৬৯; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ ১২৩)