চাকরিও করেন এমপি এনামুল, বেড়েছে বিলাসবহুল গাড়ি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৩; সময়: ৩:৩৬ pm | 
খবর > নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। টানা তিনবারের এই সংসদ সদস্যের কমেছে আয়। এনা গ্রুপের পরিচালক আগের হলফনামাগুলোতে ব্যবসা দেখালেও এবার তিনি চাকরি দেখিয়েছেন। ২০০৮ সালে কোনো গাড়ি না থাকলেও ২০২৩ সালে তিনি চারটি বিলাসবহুল গাড়ির মালিক। তার স্ত্রীর নামেও আছে একটা বিলাসবহুল গাড়ি।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে টানা তিনবার সংসদ সদস্য হন। এবার তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। রাজশাহী-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন তিনি। নির্বাচন অফিসে জমা দেওয়া হলফনামায় এই তথ্য পাওয়া গেছে।

সংসদ সদস্য হওয়ার আগে হওয়ার আগে এনামুল হকের ব্যাংক ঋণ ছিল ৩৭ কোটি টাকার বেশী। ২০১৩ সালে তিনি পুরোপুরি ঋণমুক্ত হন। তবে ২০১৮ সালের হলফনামায় আবার ঋণ দেখান তিনি। আগে গাড়ি না থাকলেও এমপি হওয়ার পর লম্বা হয়েছে তার গাড়ির বহর। ২ কোটি টাকার বেশি দামের গাড়িও রয়েছে তার।

২০০৮ সালের হলফনামায় এনামুল হক ১১টি ব্যাংকে একক, যৌথ ও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান/পরিচালক হিসেবে ঋণ দেখান ৩৭ কোটি ৭৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। তবে ২০১৩ সালের হলফনামায় ঋণ দেখাননি তিনি। মাত্র পাঁচ বছরে সব ঋণ থেকে মুক্ত হন।

২০১৮ সালে আবার তিনি ঋণ দেখানো শুরু করেন। ওই বছর তিনি বাড়িভাড়া থেকে আয় দেখান ১৫ লাখ, ব্যবসা থেকে ২৪ লাখ ও সংসদ ভাতা ১৬ লাখ টাকা। নগদ দেখান ৩৬ লাখ ৭৬ হাজার ৫৯৮। স্ত্রীর আয় দেখান ১ কোটি ১৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা দেখান ৭ লাখ ৮৭ হাজার ১১৪ টাকা। স্ত্রীর নামে দেখান ৪ লাখ টাকা। কোম্পানির শেয়ার দেখান নিজের ৪ কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার ও স্ত্রীর নামে ৭ কোটি ৬৭ লাখ ১০ হাজার টাকা।

নির্ভরশীলের নামে শেয়ার দেখান ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। তখন আমানতে তাঁর বিনিয়োগ ছিল ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৯৫৬ ও স্ত্রীর ৭৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা। তখন শুধু এনা বিল্ডিং প্রোডাক্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংকে তার ঋণ ছিল ২১ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ৪৮৬ টাকা।

এবার এনামুল হকের বাড়ি ভাড়া থেকে আয় ১৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। ব্যাংক আমানত ৫৫ লাখ ৬১ হাজার ৮৪২ টাকা। চাকরি থেকে আয় ৩২ লাখ ৩ হাজার এবং সংসদ ভাতা ২৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা। নগদ রয়েছে নিজের ২৫ লাখ ও স্ত্রীর ৩ লাখ টাকা। ব্যাংকে জমা নিজের ১১ লাখ ৫৯ হাজার ও স্ত্রীর ৩২ লাখ ১০ হাজার টাকা। কোম্পানির শেয়ার নিজের ৪ কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার ও স্ত্রীর ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার। আর নির্ভরশীলের শেয়ার ১ কোটি ৬৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার। এ ছাড়া স্থায়ী আমানতে স্ত্রীর বিনিয়োগ ১ কোটি ৭৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা।

২০০৮ সালে তার একটি গাড়িও ছিল না। এবার তার নামে হয়েছে একটি টয়োটা হার্ড জিপ, যার দাম ৬৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা, একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ হার্ড জিপ, যার দাম ২ কোটি ১২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং একটি টয়োটা হার্ড জিপ, যার দাম ৯০ লাখ টাকা। এছাড়াও স্ত্রীর নামেও ১২ লাখ ৭০ হাজার টাকার টয়োটা জিপ দেখেয়েছেন তিনি। নিজের ৪০ তোলা ও স্ত্রীর ৪০ তোলা স্বর্ণ থাকার কথা হলফনামায় লিখেছেন তিনি।

এমপি এনামুল এবার কৃষি জমি দেখিয়েছেন ১ কোটি ২৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকার। তার অকৃষি জমি রয়েছে ৬৯ লাখ ৪৮ হাজার টাকার। বর্তমানে ব্যাংকে তাঁর ঋণ ৩২ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

এনা গ্রুপ বাংলাদেশের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল কোম্পানিগুলির মধ্যে একটি। এ গ্রুপের রয়েছে এনা প্রপার্টিজ লিমিটেড, নর্দান পাওয়ার সলিউশন লিমিটেড, এনা রেডি মিক্স কংক্রিট লিমিটেড, সালেহা-ইমারত কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেড, সাকো এটেক্স লিমিটেড, ইএনএ প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন, সালেহা-ইমারত ফাউন্ডেশন ইত্যাদি। এনা গ্রুপ হল একটি নেতৃস্থানীয় বাংলাদেশী কোম্পানি যা ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী এনামুল হক।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন