‘নৌকায় ভোট না দিলে আসার দরকার নেই’ বলা আ.লীগ নেতাকে শোকজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল ওয়াদুদ দারা এবং তার তিন সমর্থককে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর মধ্যে ‘নৌকার ভোট নিশ্চিত না হলে আসার দরকার নেই’ বলা রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সামাদও রয়েছেন।
নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) ও যুগ্ম দায়রা জজ, মহানগর রাজশাহীর বিচারক লুনা ফেরদৌস এ আদেশ দিয়েছেন। গত সোম ও বুধবার এ আদেশ দেওয়া হয়।
রাজশাহী-৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুল ওয়াদুদ দারাকে প্রেরিত কারণ দর্শানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়, রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের বানেশ্বর মোড়ে সড়ক বিভাজনের ওপর দণ্ডায়মান আপনার একটি বড় ছবি দেখা গেছে। এটি নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
এ কারণে আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কেন নির্বাচন কমিশনে সুপারিশ করা হবে না- তা আগামী ২৮ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কার্যালয়ে সশরীরে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
এদিকে আব্দুল ওয়াদুদ দারার সমর্থক রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সামাদকে আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সনাতন মোড়ে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনি কার্যালয়ে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সামাদ। সেই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে আবদুস সামাদকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা সবাইকেই কেন্দ্রে নিয়ে আসার চেষ্টা করব এবং যে বিএনপির মানুষ আসবে, তাদের নৌকা মার্কার ভোটটা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের নৌকার ভোট নিশ্চিত না হলে (কেন্দ্রে) আসার দরকার নেই। সে তাইলে অন্য কাহিনি করবে। এটাকেও আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে। যার কারণে সেভাবেই আপনারা কাজ করবেন।’
আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল ওয়াদুদ দারার ভাই আবু হানিফ সুজাকে প্রেরিত কারণ দর্শানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়, গত ২৫ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টায় নির্বাচনি গণসংযোগ চলাকালে শ্যামপুর বাজারে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়া হয়। এ সময় ভোট দিতে অস্বীকৃতি জানালে আবু হানিফ সুজা উমেদ আলী নামের এক ব্যক্তিকে চড় মারেন। এটি আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। এ কারণে আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কেন নির্বাচন কমিশনে সুপারিশ করা হবে না- তা আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কার্যালয়ে সশরীরে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
এদিকে দুর্গাপুরের দাওকান্দি সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হককে প্রেরিত কারণ দর্শানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়, আপনি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার পরও সরকারি চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করে গত ৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে বর্ধিতসভায় অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া আপনি দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এটি সরকারি কর্মচারী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ কারণে আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কেন নির্বাচন কমিশনে সুপারিশ করা হবে না, তা আগামী ২৮ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কার্যালয়ে সশরীরে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।