বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ পাবিপ্রবির প্রশাসনিক কার্যক্রম

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৪; সময়: ২:২৩ pm | 
খবর > শিক্ষাঙ্গন

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। উপাচার্য অধ্যাপক হাফিজা খাতুন বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন।

এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভিসিসহ প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তা এশিয়াটিক সোসাইটিতে অবস্থান করায় পাবিপ্রবির সকল প্রশাসনিক কাজ বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, উপাচার্য হাফিজা খাতুন, উপ-উপাচার্য এস এম মোস্তফা কামাল, কোষাধ্যক্ষ কে এম সালাহউদ্দিন, রেজিস্ট্রার বিজন ব্রহ্ম, প্রক্টর কামাল হোসেন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার কামরুল হাসান, অর্থ ও হিসাব শাখার উপ পরিচালক শামসাদ ফখরুল, জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী, নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, উপাচার্যের পিএস মনিরুজ্জামানসহ প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা দপ্তরে নেই।

তারা ‘বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সামনে’ সেলফি তুলে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ নির্বাচনে ভোট চাওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশিরভাগ সময় উপাচার্য হাফিজা খাতুন ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িসহ অন্যান্য সুবিধা ব্যবহার করে তিনি দলবলসহ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা ক্যাম্পাসে উপস্থিত না থাকায় সকল কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

তাছাড়া অভিভাবকহীন ক্যাম্পাসে একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। গত পরশু শরীরচর্চা দপ্তরের কর্মকর্তা শেখ শাহজামাল কতিপয় ছাত্রের হাতে তার দপ্তরে লাঞ্ছিত হয়েছেন।

তিনি লিখিত অভিযোগ দিলেও এ নিয়ে এখন কোনো তদন্ত কমিটি গঠিত হয়নি। উপাচার্য ক্যাম্পাসে না থাকায় ফরম পূরণ, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ, সার্টিফিকেট উত্তোলন সকল কাজে শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

অর্থ ও হিসাব দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ভিসি ক্যাম্পাসে না থাকায় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বেতন বর্তমান মাসের বেতন পর্যন্ত যথাসময়ে না পাওয়া নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।’

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ছাত্র শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দূর থেকে এসে গত এক সপ্তাহ ঘুরেও সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে পারছি না উপাচার্যের স্বাক্ষর না হওয়ার কারণে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার বিজন ব্রহ্ম বলেন, ‘দরকারি অফিসিয়াল কাজে ঢাকায় এসেছে।’

ভিসির জন্য এশিয়াটিক সোসাইটিতে ভোট চাইতে গেছেন কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমরা ভোট দেখতে এসেছি।’ উপাচার্য হাফিজা খাতুন বলেন, ‘আমি সহ সভাপতি পদে নির্বাচন করছি। তবে প্রশাসনিক কাজকর্ম ঠিকই চলছে।’

উল্লেখ্য যে, ভর্তিপরীক্ষার কোটি কোটি টাকা ভাগ বাটোয়ারা, তুরস্কে লিফট কিনতে যাওয়া, উন্নয়ন প্রকল্পে কোটি কোিেট টাকা অনিয়ম, একাডেমিক মান নিম্নগামী হওয়ায় ফার্মেসি বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তিও নিষেধাজ্ঞাসহ ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে আত্মীয় প্রদর্শনের কারণে ভিসি হাফিজা খাতুন ইমেজ সঙ্কটে পড়েছেন।

এবার ভোটে দাঁড়িয়ে ক্যাম্পাসের কার্যক্রম বন্ধ রাখায় নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন