বাগমারায় কোটা বিরোধীদের কর্মসূচি পণ্ড, আ’লীগের প্রতিবাদ সমাবেশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারায় কোটাবিরোধীদের কর্মসূচি পন্ড করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কয়েক দফা চেষ্টা করেও কর্মসূচি পালন করতে পারে নি কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা। এসময় আ’লীগের দলীয় নেতা-কর্মীদের হামলার শিকার হন আন্দোলনকারীরা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার আগেই ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে উপজেলার ভবানীগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই শতাধিক আন্দোলনকারীরা ভবানীগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠ থেকে মিছিল বের করলে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতারা লাঠিশোটা নিয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। এসময় কয়েকজন আন্দোলনকারীরা হামলার শিকার হয়। পরে কোটাাবিরোধীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এসময় পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলামের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা উপজেলা পরিষদ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তারা দেশে অরাজতা ও কোটার আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির করতে দেয়া হবে বলে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করেন। তারা মিছিলটি নিয়ে ভবানীগঞ্জ বাজারের গুরুত্বপূর্ন সড়র প্রদক্ষিন শেষে উপজেলা চত্বরে এক প্রতিবাদ সভা করেন।
এদিকে কোটা বিরোধী বিষয়টি নিজের কাজে লাগাতে স্থানীয় উত্তর একডালা মহল্লার পৌর আ’লীগের নামধারী মশিউর নামের এক নেতা পূর্বের ইসুকে কেন্দ্র করে কয়েকজন তার সঙ্গী নিয়ে বাগমারা প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ সাংবাদিক আব্দুল মতিনের দোকানে হামলা চালায়। দোকানের মালপত্র বাইরে ফেলে দেয়। তাৎক্ষনিক পুলিশ ও স্থানীয় আ’লীগ নেতারা তাকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়।
তবে হামলাকারী মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে বাগমারা থানায় মাদক পাচার, ভবানীগঞ্জ পৌর সভার সহকারী প্রকৌশলীকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন, পল্লী চিকিৎস গোপাল চন্দ্রকে মারপিট সহ একাধিক মামলা ও অভিযোগ রয়েছে। এলাকার লোকজন জানান, দেউলিয়া চৌরাস্তায় কেশরহাট-ভবানীগঞ্জ সড়কে মাইক্রো যোগে মাদক পাচারের ঘটনায় মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার, প্রকৌশলীকে লাঞ্চিতসহ একাধি অপকর্মের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে দোকানে হামলা চালায় বলে ধারনা করা হচ্ছে। মশিউর রহমান এক সময়ে বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। আ’লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি দল বদলিয়ে নিজের রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে সব সময় এমন ধরনের কাজ কর্ম করে থাকেন বলে এলাকার লোকজন জানান। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য পর্যন্ত জানাজানি হলে তিনি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেন।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, পুলিশের তৎপরতার কারণে কোনো অঘটন ঘটেনি। আটক চারজনের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। তারা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নয় বলে মনে হচ্ছে। তবে আন্দোলনে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে আটক একজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।