বাগমারা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গুলিবিদ্ধ রায়হানকে অর্থ সহায়তা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ রায়হান হোসেনকে (২৬) অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে উপজেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ আহত রাহয়ানকে ২০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এসময় তিনি তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
রায়হান হোসেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার যোগীপাড়া গ্রামের কৃষক খয়বর হোসেনের ছেলে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তিনি ঢাকায় পায়ের উরুতে গুলিবিদ্ধ হয়ে অসুস্থ হয়ে বাসায় রয়েছেন। এখনো তিনি সুস্থ হতে পারবেন কি না, এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তিনি।
রায়হান হোসেন জানান, ঢাকায় একটি একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। ৫ আগস্ট ঢাকার রাজপথে ছাত্র-জনতার ঢল নামে। টেলিভিশনে শেখ হাসিনার পদত্যাগ করার খবর পেয়ে আনন্দে তিনিও ছাত্র-জনতার সঙ্গে মিশে গাজীপুর এলাকায় উল্লাস করছিলেন। দুপুরের পর তিনি অন্যদের সঙ্গে আশুলিয়া থানার সামনে গেলে সেখানে ৩৫ থেকে ৪০ জন পুলিশ সদস্যদের অস্ত্র হাতে দেখতে পান। তারা সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পুলিশ সদস্যরা অস্ত্র উঁচিয়ে সেখানে অবস্থান করছিলেন। ছাত্র-জনতা তাদের কাছাকাছি গেলে পুলিশ সদস্যরা অস্ত্র নামিয়ে মিছিলের ওপর গুলিবর্ষণ করেন। পাশে ভবনের ছাদ থেকেও ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা গুলি শুরু করেন। এ সময় শিশুসহ বেশ হতাহতের ঘটনা ঘটে। তিনিও দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ হন।
আহত অবস্থায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাকেসহ গুলিবিদ্ধ অন্যদের পাশের গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান বলে জানান রায়হান। সেখানে রোগীর অতিরিক্ত চাপ থাকার কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও ভালো চিকিৎসা পাননি তিনি। পরে নিজ জেলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। সেখানে তিন দিন চিকিৎসার পর বাড়িতে চলে আসেন চিকিৎসকের পরামর্শে। এখন বাড়িতেই অবস্থান করছেন। তার সাংসারিক অবস্থা ভাল না। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। উন্নত চিকিৎসা করার মতো সামর্থ্য তার পরিবারের নেই। এমন পরিস্থিতিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে যে পরিমান অর্থ প্রদান করেছে তাতেই তিনি খুশি। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, রায়হান হোসেনের খোঁজ খবর প্রতি নিয়ত নেয়া হচ্ছে। উপজেরা প্রশাসনের পক্ষে ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে, পরবর্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য উর্দ্ধতন কর্র্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি।