নাটোরের বড়াইগ্রামে ব্যক্তি মালিকানা স্কুলে সরকারি ভবন বরাদ্দ বাতিলের দাবি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৪; সময়: ৬:৪৩ pm | 
খবর > আঞ্চলিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়াইগ্রাম (নাটোর) : নাটোরের বড়াইগ্রামে পতিত সরকারের সাবেক এমপির ব্যক্তিমালিকানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি ভবন বরাদ্দ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বনপাড়া পৌর গেটে নাটোর-পাবনা মহাসড়কে ওই কর্মসূচি পালন করেন তারা।

জানা যায়, বনপাড়ায় সাবেক এমপি ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর ব্যক্তিমালিকানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এসআর পাটোয়ারী এডুকেয়ার ইন্সটিটিউটে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে চারতলা ভিত বিশিষ্ট একতাল একটি ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয় বৃহস্পতিবার। ওই ভবনের জন্য মোট বরাদ্দ এক কোটি ১৪ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। কাজটি বাস্তবায়ন করবেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আলী এন্টারপ্রাইজ, নাটোর।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজ করবেন অপর ঠিকাদার মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, কাজটি বিগত সরকারের আমনে অনুমোদিত। নানা দাপ্তরিক জটিলতায় শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে। বৃহস্পতিবার কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেদৌসের পক্ষে এসিল্যান্ড মোঃ আশরাফুল ইসলাম। উদ্বোধন শেষে এসিল্যান্ড স্যার উপস্থিত সকলের সামনে ঘোষনা দিয়ে বলেন কাজ ঠিক মতো করবেন। আর “কেউ বাধা দিলে বা চাঁদা চাইলে জানাবেন ব্যবস্থা নেবো”।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্কুলটি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্বীকৃতি এবং দশম শ্রেণি পর্যন্ত অনুমতি প্রাপ্ত। তবে এখানে সরকারি বিধি মোতাবেক কোন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ১২ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হলেও বর্তমান প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের শিক্ষাগত কোন যোগ্যতাই নাই। কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ন্যায় ইচ্ছামতো শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ ও ছাঁটাই করেন ডা. সিদ্দিকুর রহমান। একই সাথে সরকারি বিধির তোয়াক্কা না করে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কোচিং সেন্টারের মতো বেশি পরিমান বেতন নেওয়া হয়। তাই বোর্ডের অনুমোদন থাকলে আদতে এটা একটা কোটিং সেন্টার। সেখানে কোন ভাবেই সরকারি ভবন বরাদ্দের সুযোগ নেই। তৎকালি এমপি প্রভাব খাটিয়ে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ওই ভবনের বরাদ্দ নেন। এটা সচেতন জনতা কোন ভাবেই মেনে নেবে না। আবার প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত নয়। তাই নাগরিকদের পক্ষ থেকে দাবী করা হয় অবিলম্বে ওই ভবন বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত ভাবে যোগ্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হোক।

মানববন্ধনে কথা বলেন ডা. রাশিদুল ইসলাম রাজু, আব্দুল্লাহ আল আওয়াল মমিন, নাসিরুদ্দিন গাজী প্রমূখ। বক্তরা অবিলম্বে ওই ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবী করেন। না হলে আগামী রোববার স্মারকলিপি প্রদানসহ আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুসিয়ারী উচ্চারণ করেন। এসিল্যান্ডকে পতিত সরকারের ডামি এমপি ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর কোন এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহযোগিতা না করার অনুরোধ জানান। তা না করলে বৃহত্তোর আন্দোলনের মাধ্যমে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দৃষ্টিগোচর করতে বাধ্য হবো।

প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, স্কুলের নাম ব্যক্তির নামানুসারে। যদিও শিক্ষক-কর্মচারী সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ করা হয়নি তবু পরিচালিত হয় সরকারি বিধি মোতাবেক।

এ বিষয়ে কথা বলতে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামানের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি।

বড়াইগ্রামের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ওই স্কুলে সরকারি বরাদ্দে ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের জন্য ডাকা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধি হিসেবে আমি সেখানে উপস্থিত হয়েছে। এটা আমার উপর অর্পিত রাষ্ট্রিয় দায়িত্ব, আমি সেটাই পালন করেছি।

 

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন